আখাউড়ায় বাল্য বিয়ের হিড়িক ২ সপ্তাহে ৪ বিয়ে বন্ধ
করোনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বাল্যবিবাহের প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ সপ্তাহে ৪ টি বাল্যবিয়ের আয়োজন পন্ড করেছে উপজেলা প্রশাসন। বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাওয়া চারজনই স্কুল শিক্ষার্থী। আখাউড়ায় এই বাল্য বিবাহের প্রবনতা বৃদ্ধি সচেতনতার অভাব বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।
এরা সবাই ৫ম শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী।বিয়ে বন্ধের পাশাপাশি লকডাউন অমান্য করা এবং বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় কনে পক্ষের অভিভাবকদের বিভিন্ন অংকে জরিমানা ও মুচলেকা আদায় করেছে প্রসাশন।
মঙ্গলবার(১০আগষ্ট)দুপুরে উপজেলার পৌরশহরের বড় বাজার এলাকায় মো:নয়ন মিয়ার মেয়ের সঙ্গে একই এলাকার মৃত আবুবক্কর সিদ্দীকের ছেলে মো:সোহেল মিয়ার(২২)বিয়ের দিন ধার্য ছিল।
বাড়িতে বিয়ের পেন্ডেল করে বরের জন্য অপেক্ষা করছিল কনেপক্ষের লোকজন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার পুলিশ নিয়ে হাজির হন কনের পিত্রালয়ে।পরে যাচাই-বাছাই করে কনের বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় কনে পক্ষ কে বুঝিয়ে বিয়ে ভেঙে দেন। বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় কনের মা জোৎনা বেগমকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।এছাড়াও কনের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবে না মর্মে মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।
এদিকে গত সোমবার (৯আগষ্ট)দুপুরে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের সোলাইমান মিয়ার মেয়ের সঙ্গে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের খারকোট গ্রামের সানু মিয়া ছেলে শাহীনের (২৬) বিয়ের দিন ধার্য ছিল। বিয়ের দিন গোপন সংবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার পুলিশ নিয়ে কনের পিত্রালয়ে বাড়িতে হাজির হন।পরে যাচাই-বাছাই করে কনের বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় কনে পক্ষকে বুঝিয়ে বিয়ে ভেঙে দেন। বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় কনের মা মনিহা বেগমকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এর আগে গত ২৬ জুলাই উপজেলার ধরখার ইউনিয়নে রুটি গ্রামের দুবাই প্রবাসী সুহেল মিয়ার ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে এবং ৩০ জুলাই মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিল গ্রামের ফরিদ মিয়ার ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ের দুটি বাল্যবিয়ের আয়োজন ভেঙে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন,দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ। এ কারণে অভিভাবকেরা যে সকল মেয়ের পড়ায় আগ্রহ কম তাদের অভিভাবকরা বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছে। তিনি আরো বলেন লকডাউন শেষে প্রতিটি ইউনিয়নে অভিভাবক ও জন প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হবে।