ঈদুল আযহায় যে সব বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন

১৯৯

আমাদের সামান্য অসচেতনতা/অজ্ঞতার কারনে ঈদের পর পরই পরিবেশগত বিপত্তি দেখা দেয় যা আমাদের জীবনযাত্রায় অস্বস্থিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। কোরবানীর পশুর বর্জ্য যত্রতত্র ফেলার কারনে পচে চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়,পরিবেশ দুষিত করে, রোগজীবাণু ছড়ায়, নালা নর্দমা ভরে যায় ও পানি নিস্কাষনে বাধাগ্রস্ত করে। নগর কর্তৃপক্ষ সকল শক্তিপ্রয়োগ করেও আবর্জনা সরাতে হিমশিম খায়,এক্ষেত্রে প্রচুর অর্থও ব্যয় হয়।

জীবজন্তুর দেহের অংশবিশেষ বা পচনশীল বর্জ্য যা পচে গেলে গন্ধ ছড়ায় সেগুলোও মাটির নীচে পুতে ফেলা উচিত, নগর কর্তৃপক্ষ শহরের সম্ভব সকল মহল্লায় এক বা একাধিক ৪/৫ বর্গফুট বা প্রয়োজনমত গর্ত খুঁড়ে উক্ত স্থানে কোরবানীর বর্জ্য ফেলার জন্যে জনপ্রতিনিধি ও মসজিদের ঈমামদের মাধ্যমে সকলকে আহবান জানাতে পারেন।

যাদের বাড়ীর আঙিনায় জায়গা আছে তারা নিজেদের কোরবানীর পশুর বর্জ্য মাটির নিচে পুতে ফেলতে পারেন। তবে শহরাঞ্চলে গর্ত খুঁড়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বিদ্যুৎ/টেলিফোনের তার কাটা না পড়ে। গ্রামাঞ্চলের লোকেরা একত্রে এভাবে কোরবানীর বর্জ্য মাটির নিচে পুতে এক বছরের বর্জ্য পরবর্তী বছর কোরবানীর আগেই উঠিয়ে জৈব সার হিসেবে শষ্যক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আলোচিত পদ্ধতির পাশাপাশি যেসব এলাকায় গর্ত খুঁড়ার উপর্যুক্ত জায়গা নেই সে সব এলাকার বর্জ্য প্রচলিত উপায়ে অপসারনের ব্যবস্থা নেয়া যায় ।

এতে নগর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বভার কিছুটা কমবে।পশুর ফেলে দেয়া নাড়ি-ভুড়ি থেকে মানুষের খাদ্য, পাশাপাশি উৎকৃষ্ট মানের মাছের খাদ্য বা পশু খাদ্য তৈরী করা সম্ভব। একইভাবে পশুর হাড় গুড়া করে পশু খাদ্য বা উৎকৃষ্ট মানের সার তৈরী করা যায়। বর্জ্যকে এভাবে ব্যবস্থাপনায় আনলে নগর দূষণমুক্ত থাকবে, জনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত হবেনা।

কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি : পশুর জন্য কেনা খড়কুটো যেখানে-সেখানে ফেলে রাখবেন না। উন্মুক্ত ডাস্টবিন ও নর্দমায় ময়লা ফেলবেন না।  কোরবানির পশুকে যেখানে রাখবেন, সেখানে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জায়গাটিকে রোগজীবাণুমুক্ত রাখুন।  পশু জবাইয়ের পরে রক্ত ও ময়লা পানি যেন রাস্তায় ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।  বাড়ির আশপাশের নর্দমায় পশুর রক্ত ও বর্জ্য কখনোই ফেলবেন না। এতে অন্য বাড়ির আশপাশে দুর্গন্ধ তৈরি হয়।

সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত পশু জবাইয়ের জায়গায় কোরবানি দেওয়ার চেষ্টা করুন। জবাইয়ের সময় পানির ব্যবহারের দিকে গুরুত্ব দিন। পানির অপচয় করবেন না। বাড়ির আশপাশে গোবর কিংবা অন্য পশুর বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে কি না, তা খেয়াল রাখুন। নিজে সচেতনভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করুন। আপনার কারণে দুর্গন্ধে যেন অন্যের সমস্যা তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রতিবেশীদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দুর্গন্ধ না ছড়ানোর দিকে খেয়াল রাখতে সচেতন করুন। যে পোশাক পরে পশু জবাই করছেন, তা ভালো করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করুন। সিটি করপোরেশনের জন্য পশুর বর্জ্য পলিথিনের ব্যাগে ভালো করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখুন।

 

নিউজ ডেস্ক / বিজয় টিভি

You might also like