সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে ২০১৮ সালে কোটা বাতিল সংক্রান্ত সরকারের পরিপত্র বলবৎ আছে উল্লেখ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ আহ্বান জানান তিনি।
নিজ ফেসবুক পেজে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত শুধু স্থিতাবস্থার আদেশ দেননি। শুধু স্থিতাবস্থার আদেশ দিলে কোটার বিষয়ে সরকারের পরিপত্র বাতিল করে উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছিল সেটি বলবৎ থাকতো। খেয়াল করতে হবে, সর্বোচ্চ আদালত কোটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন অর্থাৎ কোটা বিষয়ে সরকারের জারি করা পরিপত্র এখনও আবার বলবৎ হলো।
গত কয়েকদিন ধরেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা। এরপর সোমবার এক দফা দাবিতে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন তারা। মঙ্গলবার বিরতি রেখে বুধবার সকাল থেকে একই কর্মসূচিতে নামেন আন্দোলনরতরা। ধীরে ধীরে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজারসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সড়কে চলাচলরত সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন চিকিৎসার প্রয়োজনে চলাচলরত রোগী ও স্বজনরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে সরকার। এরপর ২০২১ সালে এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানিতে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল দেন হাইকোর্ট। গত ৫ জুন চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা এবং কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে ৪ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আপিল বিভাগ নট টুডে (৪ জুলাই নয়) বলে আদেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আবেদন করেন।
কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী এবং রাষ্ট্রপক্ষে আবেদনের শুনানি হয় আপিল বিভাগে। শুনানি শেষে কোটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
স্থিতাবস্থার আদেশের পরও শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন। তারা আজ তৃতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন।