না ফেরার দেশে চলে গেলেন চিত্রনায়ক ফারুক
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ওরফে ফারুক আর নেই, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই শক্তিমান চিত্রনায়ক।
অভিনেতা মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে রোশান হোসেন। আগামী ১৬ মে ভোরের ফ্লাইটে চিত্রনায়ক ফারুকের মরদেহ ঢাকায় আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। তার বাবা আজগার হোসেন পাঠান। এই অভিনেতার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। প্রথম জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফারুক। পাশাপাশি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
এদিকে, ১৯৭১ সালে ‘জলছবি’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রের মায়ানগরীতে অভিষেক ঘটে আকবর হোসেন ফারুকের। জনপ্রিয় এই অভিনেতা, ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’ ও ‘মিয়া ভাই’সহ প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
তাছাড়া, ‘’লাঠিয়াল’’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ফারুক ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। পাশাপাশি ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়।
প্রায় পাঁচ দশক ঢালিউডে অবদান রেখেছেন ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো ঢাকা-১৭ আসনের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
এদিকে, কিংবদন্তি এই অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশের চলচ্চিত্রে নায়ক ফারুক এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতি ও সংস্কৃতি অঙ্গনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পাশাপাশি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তাছাড়া, এই অভিনেতার মৃত্যুতে গোটা চলচিত্রাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অবশেষে ওপারে ভালো থাকুক ঢালিউডের সবার প্রিয় ‘মিঞা ভাই’।