শিশুর সঠিক প্রারম্ভিক বিকাশ মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে ভূমিকা রাখে
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, সুষ্ঠু শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশের জন্য শিশুদের জীবনের প্রথম আট বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শিশুর শিক্ষা ও বিকাশের ভিত্তি রচিত হয়। শিশুর সঠিক প্রারম্ভিক বিকাশ মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (১৪ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বাংলাদেশ আরলি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট নেটয়ার্ক (বেন) আয়োজিত জাতীয় ইসিডি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইসিডি নেটওয়ার্কের সভাপতি ড. মঞ্জুর আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ মি. শেলডন ইয়েট। এতে কিনোট উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল এক্সপার্ট অন চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ড. জোয়ান লোম্বার্ডি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি মেধাসম্পন্ন জাতি গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিশুবান্ধব সরকার শিশুর খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য-সেবা, সুরক্ষা ও শিক্ষা নিশ্চিত করছে। গর্ভাবস্থা থেকেই মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছে। সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশু যত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঁচ লাখ ষাট হাজার শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ, সুরক্ষা ও সাঁতার সুবিধা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা সংবিধানে শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। দেশ স্বাধীনের পরপরই শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু রোধ এবং প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ও কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ২ লাখ ৭৫ হাজার কর্মজীবী মায়ের জন্য ল্যাক্টেটিং মা ভাতা কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের পনেরটি মন্ত্রণালয় শিশুকেন্দ্রিক বাজেট বাস্তবায়ন করছে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা শিশুর উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে সরকার গর্ভাবস্থা থেকে মা ও শিশুর পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে ভাতা দিচ্ছে। তিনি শিশুর উন্নয়ন ও সুরক্ষায় সরকারি ও উন্নয়ন সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
এবারের ইসিডি সম্মেলনে শিশুর পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষা বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ছয়টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সরকারি, জাতিসংঘ, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের দেড় শতাধিক ইসিডি প্র্যাকটিশনার ও প্রতিনিধি যোগদান করেন।
এসময় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামান ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।