হাজারীবাগ এলাকার বিষাক্ত মাটি সরিয়ে ফেলা হবে
ট্যানারি শিল্পের কারণে রাজধানী ঢাকার হাজারীবাগ এলাকার মাটি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। এক সময় ওই এলাকার ট্যানারিশিল্পের বর্জ্যরে কারণে মাটিতে মিশেছে ক্রোমিয়াম, লেড ও আর্সেনিকের মতো ভারী ও বিষাক্ত ধাতু। অবস্থানভেদে মাটির গভীরে এ দূষণের মাত্রা ৮ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। এতে ভূ-গর্ভস্থ পানি ক্রমান্বয়ে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। দূষিত মাটি গাছপালার পাশাপাশি এলাকার বহুতল ভবনের জন্যও হমকি হয়ে উঠেছে। অবস্থার উন্নয়নে রাজউকের পক্ষ থেকে হাজারীবাগ এলাকার মাটি সরিয়ে নতুন মাটি ভরাটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাজউকের তথ্য মতে, হাজারীবাগে দেশের সবচেয়ে বড় ট্যানারি এলাকা হওয়া সত্বেও এতে কোনও ইটিপি বা সিইটিপি স্থাপনা করা হয়নি। যে কারণে ট্যানারিগুলো থেকে নির্গত দূষিত পানি ও রাসায়নিক বর্জ্য খোলা ড্রেনের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়তো। এর ফলে এলাকার মাটি, পানি ও বায়ু দূষিত হয়ে পড়ে।
রাজউকের পরিসংখ্যান বলছে, হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো থেকে প্রতিদিন ৭৫ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য ও ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য কোনোরূপ পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি খোলা ড্রেন দিয়ে মাটি, পানি ও নদীতে গিয়ে পড়তো। এতে পুরো এলাকায় দূষণ ছড়িয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় জাপান ও সিঙ্গাপুরের আদলে হাজারীবাগ এলাকার ভূমির উন্নয়ন করতে চায় রাজউক। প্রকল্পের আওতায় হাজারীবাগের ৮ ফুট গভীর পর্যন্ত মাটি অপসারণ করে বিশুদ্ধ মাটি দিয়ে ভরাট করা হবে। যাতে দূষিত মাটি নতুন প্রকল্প এলাকা ও ভূ-গর্ভস্থ পানির ক্ষতি করতে না পারে। এ জন্য এলাকার স্থানীয় ভূমি মালিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক ও আলাপ আলোচনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভূমি মালিকরা ইতিবাচক সড়াও দিয়েছেন।
হাজারীবাগের উন্নয়নের জন্য তিনটি পদ্ধতিকে বাচাই করেছে রাজউক। এগুলো হচ্ছে- ভূমি মালিক সমিতির নিজস্ব উদ্যোগ, ভূমি মালিক সমিতির সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির চুক্তি ও ভূমি মালিক সমিতির সঙ্গে রাজউকের চুক্তি। ভূমি মালিকরা সম্মত হলে এ তিনটি পদ্ধতির যে কোনও একটির মাধ্যমে হাজারীবাগের উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ঋণ দাতা সংস্থা বা সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করতে আগ্রহী রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
নিউজ ডেস্ক / বিজয় টিভি