১২ বছর পর মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি গ্রেফতার
স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরেোধে হত্যার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জাকির হোসেন (৪১) ১২ বছর পলাতক ছিল। অবশেষে সে ধরা পড়েছে র্যাবের হাতে। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের নিপা আক্তার (২২) ও তার মেয়ে জ্যোতিকে (৩) হত্যার অপরাধে সাভার থানা এলাকার শাহীবাগ থেকে জাকিরকে আটক করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাকির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় নিপা আক্তারের। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে জাকির। এরই মধ্যে তাদের ঘরে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পরে নিপা আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়। এ সময় জাকিরের সঙ্গে তারই বড় ভাই জাহাঙ্গীরের স্ত্রী তাহমিনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে জাহাঙ্গীর বাড়িতে না থাকার সুযোগে জাকির তাহমিনার ঘরে গেলে তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে নিপা। নিপা তখন জাহাঙ্গীরকে সব বলে দেবে বলে জানালে জাকিরের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়।
ঝগড়ার জেরে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় নিপাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে জাকির। এ সময় সে তার শিশুকন্যাকেও হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিপা আক্তারের বাবা আবু হানিফ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর জাকিরকে গ্রেফতারও করা হয়। তবে পাঁচ বছর কারাভোগের পর ২০১০ সালে জামিনে ছাড়া পেয়ে আত্মগোপনে যায় সে।
২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি আদালতের রায়ে জাকিরের মৃত্যুদণ্ড হয়। এছাড়া, হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাহমিনা, আমিনুল, মিলন, স্বপন ও হাসানকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাকির প্রথমে পালিয়ে সাভারে যায়। পরে সে বাউলের ছদ্মবেশ নেয়। ২০১৩ সালে আবার বিয়ে করে জিনজিরায় থাকতে শুরু করে জাকির।
তবে এক জায়গায় বেশিদিন থাকতো না সে। গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম, ঢাকার আরামবাগ, ফকিরাপুল, হাজারীবাগ ও খিলগাঁওতেও ছিল সে। গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত বাউল ছদ্মবেশেই বিভিন্ন গানের দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতো।