আগামী বছর ২০২৫ সালে মিয়ানমারে পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে। দেশটিতে ক্ষমতসীন জান্তা বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সম্প্রতি এই ঘোষনা দিয়েছেন।
সে দিন মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের মেইকতিলায় সেনাবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘বর্তমান অন্তবর্তি সরকার ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সাল উল্লেখ করলেও কোন মাসে নির্বাচন হবে— সে সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেননি জেনারেল হ্লেইং।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; অভ্যুত্থানের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।
অভ্যুত্থানের পরপরই বন্দি করা হয় অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতা-কর্মী ও এমপিদের। সু চি সহ তার দলের নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই এখনও কারাগারে রয়েছেন। গত বছর সু চির দল এনএলডিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে সেনা সরকার।
এর আগেও একাধিকবার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন জেনারেল মিন অং হ্লেইং। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পালন করেননি তিনি বা তার নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকার। সর্বশেষ গত বছর জুলাই মাসে হ্লেইং বলেছিলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হবে মিয়ানমারে।
এবারও তিনি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবেন কি না— তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ গত ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে ব্যাপকমাত্রায় তৎপর হয়ে উঠেছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। এসব গোষ্ঠীর আক্রমণের মুখে অনেক অঞ্চলেই পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে সেনা বাহিনী।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের অন্তত এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী।