ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড ‘সেভেন সিস্টার্সের’ মণিপুর রাজ্যে সশস্ত্র কুকি বিদ্রোহীদের রকেট হামলায় একজন নিহত এবং কয়েকজনের আহত হয়েছেন। রাজ্যের রাজধানী ইমফাল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বিষ্ণুপুর জেলার মইরাং শহরে শুক্রবার এই হামলা হয়। খবর এনডিটিভির।
হামলায় প্রার্থনারত সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন, যার মধ্যে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী রয়েছে। গত পাঁচ দিনে কুকি বিদ্রোহীদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার কুকিদের ছোড়া রকেটটি রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মাইরেমবাম কইরেং সিংয়ের বাড়িতে আঘাত হানে। মইরাং শহরে অবস্থিত ভারতের জাতীয় সামরিক জাদুঘর থেকে ১০০ মিটারের দূরে এটির অবস্থান। মইরং শহরটি গড়ে উঠেছে উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় সাধুপানির আধার খ্যাত লোকতাক হৃদের তীরে। মইরংয়ের এই সামরিক জাদুঘরটি নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোসকে উৎসর্গ করে নির্মাণ করা হয়েছে।
১৯৪৪ সালের ১৪ এপ্রিল এই মইরংয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পতাকা উড়ানো হয়েছিল। মাইরেমবাম কইরেং সিং স্বাধীনতার পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি জেল খেটেছিলেন। পরে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
এনডিটিভির খবরে আরও বলা হয়েছে, জাদুঘরটি রকেট হামলার লক্ষ্য ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, পাহাড়ের দিক থেকে রকেটটি এসেছে। নিহত সপ্ততিপর ব্যক্তির নাম আরকে রাবেই, যিনি মেইতেই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
তার প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলেছে, প্রার্থনার সময় রাবেইয়ের মাথায় রকেটটি আঘাত করে এবং সেখানেই তিনি মারা যান। রকেট ও ড্রোন হামলার প্রেক্ষিতে মণিপুরের সব স্কুল শনিবার বন্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিষ্ণপুর জেলাতেই দুইবার রকেট হামলা চালিয়েছে কুকি বিদ্রোহীরা। এ দিন সকালে চুরাচাঁদপুর জেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে কুকিরা আরও দুটি রকেট ছোড়ে বলে তথ্য দিয়েছে মণিপুর পুলিশ। এছাড়া পাহাড় থেকে বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুর জেলায় গুলিও চালিয়েছে, যার জবাবও দেওয়া হয়েছে, বলছে মণিপুর পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে ত্রংলাওবি এলাকার কুম্বি গ্রামে কয়েকটি ড্রোন হামলা চালিয়েছে কুকি বিদ্রোহীরা। তাতে দুজন নিহত ও ৯ জন আহত হওয়ার খবর আসে। আহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী কিশোরীও রয়েছে।