আশঙ্কাটা আগে থেকেই ছিল। এ বার সেই ঘোষণাটাও করে দিলেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। জার্মানিতে যে মার্কিন সেনা আছে তার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। জর্মানিতে এরপর ২৫ হাজার মার্কিন সেনা থাকবে।
জার্মানি থেকে সেনা কমাবার সিদ্ধান্ত কেন নিতে গেলেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট? ট্রাম্প বলেছেন, ”আমরা জার্মানিকে রক্ষা করছি, আর ওরা আমাদের অবহেলা করছে। এর কোনও মানে হয় না। আমরা জার্মানিতে সেনার সংখ্যা কমিয়ে ২৫ হাজার করে দেব। ওখানে সেনা বহাল রাখতে অ্যামেরিকাকে প্রচুর খরচ করতে হচ্ছে।”
ট্রাম্পের দাবি, ন্যাটোর সদস্য হিসাবে ২০২৪ সালের মধ্যে জিডিপির দুই শতাংশ প্রতিরক্ষাখাতে খরচ করার কথা জার্মানির। কিন্তু তা তারা করছে না। জার্মানি বলছে, ২০৩১ সালের মধ্যে তারা প্রতিরক্ষায় এতটা অর্থ খরচ করতে পারবে। বার্লিন যদি অর্থের পরিমাণ না বাড়ায়, তা হলে অ্যামেরিকা সেনা কমাতে থাকবে।
ট্রাম্পের অভিযোগ হলো, বাণিজ্য ক্ষেত্রেও অ্যামেরিকার স্বার্থরক্ষা করছে না জার্মানি। তাই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এবং ন্যাটোর দায়বদ্ধতা পালনের ক্ষেত্রে তাঁদের আচরণে অ্যামেরিকা ক্ষুব্ধ।
ট্রাম্প যে ভাবে সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছেন, তাতে ইউরোপীয়মিত্র দেশগুলির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের দায়বদ্ধতা সম্পর্কেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এই মাসের গোড়ায় মার্কিন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে, অ্যামেরিকা জার্মানি থেকে সেনা কমাবে। তারপর জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছিলেন, ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অ্যামেরিকার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক জটিল হয়েছে।
ট্রাম্প সেই ঘোষণা করার পর জর্মানিতে একমাত্র বামপন্থী দল ছাড়া কেউ এখনও তাকে স্বাগত জানায়নি। বাম দল চায়, অ্যামেরিকার একজন সেনাও যেন জার্মানিতে না থাকে।
তবে অ্যামেরিকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত এমিলি হাবের বলেছেন, ”জার্মানির রক্ষার জন্য মার্কিন সেনা সেখানে নেই। তারা সেখানে আছে আটলান্টিক পারের নিরাপত্তার জন্য এবং আফ্রিকা ও এশিয়ায় অ্যামেরিকার শক্তি দেখানোর জন্য।”
ট্রাম্পের এই ঘোষণা নিয়ে তাঁর নিজের দেশেই প্রবল সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁর নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারাও এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না। ট্রাম্প ও তাঁর সহকর্মীদের চিঠি নিখে ম্যাক থমবেরি বলেছেন, ”এই সিদ্ধান্ত ন্যাটোর প্রতি মার্কিন দায়বদ্ধতাকে কম করবে। এতে রাশিয়ার সুবিধা হবে। তাদের আগ্রাসী মনোভাব বাড়তে পারে।” ডেমোক্র্যাট সেনেটর জ্যাক রিডও বলেছেন, ”রশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিনকে আরেকটি সুবিধা করে দিলেন ট্রাম্প।” রিপাবলিকান প্রতিনিধি লিজ চেরির মতে, ”অ্যামেরিকার স্বার্থেই জার্মানিতে সেনা থাকা প্রয়োজন। রাশিয়া ও চীন বিশ্ব জুড়ে স্বাধীনতা ও সুরক্ষার ওপর আঘাত হানতে পারে। সে জন্য ইউরোপে মার্কিন সেনার উপস্থিতি জরুরি।” সূত্র: ডয়েচে ভেলে