ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় অন্যতম আসামি সিয়াম হোসেনকে ১৪ দিনের জন্য সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল বারাসাত জেলা আদালত। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে আনা হয় অভিযুক্ত সিয়ামকে। মামলাটি উঠে আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারক সংগীতা লেট’এর এজলাসে। আগামী ২২ জুন ফের তাকে আদালতে তোলা হবে।
এদিন সিআইডির তরফে অভিযুক্তকে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায়। তারপর আদালতও তা মঞ্জুর করে।
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মন্দাক্রান্তা মুখার্জি জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য-প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা)-এই চার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেয়া হয়েছে। পুনর্নির্মাণ, এমপি আনারের লাশের টুকরোর সন্ধান, হত্যায় কি কি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো উদ্ধারসহ তদন্তে গতি আনতেই সিয়ামকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়েছে সিআইডি। পরবর্তীতে ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারা যুক্ত করা হবে বলেও জানান মুখার্জি।
শুক্রবার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওইদিন সিআইডির তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয় সিয়ামের বাড়ি বাংলাদেশের ভোলা জেলার বুরহাদ উদ্দিন গ্রামে। তার পিতা আলাউদ্দিন বালি। ৩৩ বছর বয়সী সিয়াম ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বনগাঁ এলাকায় আত্মগোপন করেছিল বলে জানা যায়।
এর আগে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিহাদ হাওলাদার নামে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গত ২৩ মে এই জিহাদকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই সিয়ামের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারে তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে সঞ্জীবা গার্ডেনে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। মনে করা হচ্ছে্ এমপি খুন ও লাশ লোপাটের কাজে যুক্ত ছিল এই সিয়াম। নিউটাউনের অভিজাত ওই সঞ্জীভা গার্ডেনের যে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসে তাতেও সিয়ামকে দেখা যায়।
এদিকে এই ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও এই সিয়ামের বিষয়টি সামনে আসে। এবার নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তে আরও গতি আনতে চায় কলকাতা সিআইডির কর্মকর্তারা।