গাজীপুরের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ছাত্র-জনতাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে প্রত্যাহার করা হয়। গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আমি ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছি। হামলাকারী কাউকে ছাড়া হবে না, প্রতিটি হামলার জবাব দেওয়া হবে। যেসব পুলিশ রেসপন্স করতে দেরি করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এদিকে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে শনিবার একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সংশ্লিষ্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আজ শনিবার থেকেই গাজীপুর এলাকাসহ সারাদেশে এই অভিযান শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে আহত হন অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের নেতাকর্মীরা বলেন, হামলায় আহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাইকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলায় আহতদের দেখতে গতকাল রাত তিনটার দিকে হাসপাতালটিতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দুই নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবি, গতকাল রাতে খবর আসে, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা রওনা হয়। দ্রুত ১৫ থেকে ২০ জন ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে লুটপাট হচ্ছে। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষকে জড়ো করা হয়। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে বাসার ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও পেটায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মাহিম জানান, আ ক ম মোজাম্মেল হকের ধীরাশ্রমের বাড়িতে লুটপাট হচ্ছে, এমন খবরে লুটপাট ঠেকাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও এলাকাবাসী তাদের ওপর হামলা চালায়।