“বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব” পদক প্রবর্তন করেছে সরকার। রাজনীতি; অর্থনীতি; শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া; সমাজসেবা; স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ; গবেষণা; কৃষি ও পল্লিউন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার জন্য এ বছর ( ২০২১ সাল) থেকে পাঁচজন বাংলাদেশী নারীকে এই পদক প্রদান করা হবে।
আজ (সোমবার) “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক- ২০২১” প্রদান সংক্রান্ত কর্মসূচি প্রণয়ন বিষয়ে এক ভার্চ্যুয়াল সভায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের রয়েছে অপরিসীম অবদান। বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সহধর্মিণী ও বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে নেপথ্য কারিগর। মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার দেশপ্রেম, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, সাহসিকতা, মানবকল্যাণ ও ত্যাগের মহিমা বাঙালিসহ বিশ্বের সকল নারীর কাছে চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা এসময় বলেন, বঙ্গমাতার অবদান চিরস্মরণীয় করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতির জন্য “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব” প্রবর্তন করেছে। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীনসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভায় জানানো হয়, এ বছর থেকে রাজনীতি; অর্থনীতি; শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া; সমাজসেবা; স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ; গবেষণা; কৃষি ও পল্লিউন্নয়ন এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার জন্য “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব” পদক প্রদান করা হবে। যা নারীদের জন্য ‘ক’ শ্রেণীভূক্ত সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক হিসেবে গণ্য হবে। পদক প্রদানের জন্য মনোনীত নারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। প্রতি বছর সর্বোচ্চ পাঁচজন নারীকে এ পদক প্রদান করা হবে।
পদকপ্রাপ্ত একজন নারী পাবেন আঠারো ক্যারেট মানের চল্লিশ গ্রাম স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, চার লক্ষ টাকার চেক ও সম্মাননা সনদ। এ লক্ষ্যে “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব” পদক নীতিমালা ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রতিবছর ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর জন্মদিবস উপলক্ষে আয়োজিত “ক” শ্রেণীর জাতীয় দিবস অনুষ্ঠানে চুড়ান্তভাবে মনোনীত ব্যক্তিদের এ পদক প্রদান করা হবে।
পদকপ্রাপ্তদের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় রয়েছে নয় সদস্য বিশিষ্ট ‘প্রার্থী বাছাই কমিটি’। কমিটির আহবায়ক আছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/ প্রতিমন্ত্রী। সদস্য হিসেবে আছেন মহিলা ও শিশু বিষয় মন্ত্রণালয়; জননিরাপত্তা বিভাগ; সংস্কৃতি বিষয় মন্ত্রণালয়; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ; তথ্য মন্ত্রণালয়; মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব। কমিটির সদস্য সচিব মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রশাসন।
এ কমিটি প্রাপ্ত আবেদন মূল্যায়ন করে সর্বোচ্চ দশজনের নাম জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নিকট বিবেচনার সুপারিশসহ প্রস্তাব প্রেরণ করবে। পরবর্তীতে জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে “বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব” পদক প্রদানের বিষয় চুড়ান্ত হবে।
এবছর পদক প্রাপ্তির ক্ষেত্র উল্লেখপূর্বক আগামী ৩১ মে ২০২১ তারিখের মধ্যে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক নীতিমালা ২০২১ অনুযায়ী ও নির্ধারিত ছকে আবেদন করতে হবে। আবেদনের নির্ধারিত ছক www.mowca.gov.bd ও www.jms.gov.bd – এ পাওয়া যাবে। যা পুরণ করে আগামী ৩১ মে তারিখের মধ্যে ই-মেইলে ( sasmobio-1@mowca.gov.bd) এবং ডাকযোগে হার্ড কপি সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরণ করতে হবে।