বিলুপ্তপ্রায় প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নতুন রূপে ও আধুনিক পদ্ধতিতে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার, ভোরনিয়া গ্রামে প্রস্তুত করা হচ্ছে ঢেঁকিছাঁটা চাল। ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরিকৃত ঢেঁকির মাধ্যমে ধান ভেঙে চাল করে বাজারজাত করছেন এ এলাকার এক যুবক। তার এই ঢেঁকি ছাঁটা চাল বেশ সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে এলাকায়। এদিকে, সংশ্লিষ্টদের আশা, এ পদ্ধতির মাধ্যমে একদিকে যেমন পুষ্টিকর চালের চাহিদা মিটবে অন্যদিকে, অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
রাণীশংকৈলের ভোরনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক। তার স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে নিজে চাকরি না করে তার মাধ্যমে অন্যের কর্মসংস্থান তৈরি করা। সে লক্ষ্যেই তার নিজস্ব চিন্তা-চেতনায় আধুনিক পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ও মোটরের মাধ্যমে গত ৬ মাস আগে স্থাপন করেন “ডিজিটাল ঢেঁকি”।
প্রাচীন ঢেঁকিতে ধানের তুষ ছাড়িয়ে চাল বের করা খুব কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ হলেও ওমর ফারুকের তৈরিকৃত আধুনিক পদ্ধতির ঢেঁকিতে ধান ভাঙা খুবই সহজ। এবং এ পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে অধিক পরিমাণে চাল বের করা যায়।
অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে এলাকায় এ ডিজিটাল ঢেঁকির চালের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এছাড়া সহজেই এই ঢেঁকির মাধ্যমে দিনে ৫ থেকে ৬ মণ ধান ভাঙতে পারেন এখানে কর্মরতরা।
বর্তমানে স্বল্প পরিসরে হলেও ওমর ফারুকের ডিজিটাল ঢেঁকিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকে। প্রযুক্তিগত বা কারিগরি সহায়তা পেলে বড় পরিসরে গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান, ওমর ফারুক।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, সময়ের সাথে বিভিন্ন অটোরাইস ও হাস্কিং মিল হওয়ায় গ্রাম বাংলা থেকে ঢেঁকি উঠে গেছে প্রায়। ওমর ফারুক তার নিজস্ব পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢেঁকিকে আবার জনপ্রিয় করে তুলেছেন।
ঢেঁকিছাঁটা চাল শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপযোগী। কিন্তু কালের বিবর্তন ও যান্ত্রিক সভ্যতার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে ধান থেকে চাল-আটা তৈরির এ মাধ্যমটি। অন্যদিকে, ওমর ফারুকের তৈরিকৃত এ ঢেকিতে ধান ভানতে সময় ও শ্রম দুটোই কম লাগে।