ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান তামির পার্দো বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর জ্বাতিবিদ্বেষ চাপিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল। তার এই অভিযোগের মাধ্যমে পশ্চিম তীরের পরিস্থিতির সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী নিপীড়নের তুলনা করা ইসরায়েলিদের তালিকায় তিনি যোগ দিলেন।
মোসাদের সাবেক প্রধান হওয়ার কারণে তামির পাদ্রোর দৃষ্টিভঙ্গি ইসরায়েলে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এমন সময় তিনি এ কথা বলেছেন যখন দেশটির সরকারের উগ্র-ডানপন্থিরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের যেকোনও সম্ভাবনাকে চাপা দিতে চাইছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পার্দো বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসরায়েল যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যেমন- চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করে তাদের সামরিক আইনের অধীনে রাখা হয়েছে। কিন্তু দখলকৃত ভূখণ্ডে ইহুদি বসতি বেসামরিক কোর্ট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এম পরিস্থিতি পুরনো দক্ষিণ আফ্রিকার মতোই।
তামির পার্দো বলেছেন, ‘এখানে একটি জাতিবিদ্বেষী রাষ্ট্র রয়েছে। এই অঞ্চলে দুজন মানুষকে দুটি পৃথক আইন ব্যবস্থা দিয়ে বিচার করা হয়। এমনটি শুধু একটি জাতিবিদ্বেষী রাষ্ট্রে হতে পারে।’
২০১১ সালে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মোসাদ প্রধান হিসেবে পার্দোকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। নেতানিয়াহু এখনও প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টি বলেছে, এমন মন্তব্যের জন্য পার্দোর লজ্জিত হওয়া উচিত।
ইসরায়েলের অতীত ও বর্তমানের সরকার বর্ণবৈষম্যের অভিযোগের সমালোচনা করে আসছে। উল্টো দেশটি এসব অভিযোগে ইহুদি-বিরোধী হিসেবে তুলে ধরছে। তাদের আশঙ্কা, এমন অভিযোগ বয়কট আন্দোলনকে গতি দেবে অথবা আন্তর্জাতিক আইনে জ্বাতিবিদ্বেষের বিচারের পথ খুলে দেবে। কিন্তু এখন যখন ইসরায়েলি ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে জড়িতদের কাছ থেকে উঠে আসছে তখন সেগুলো উড়িয়ে দেওয়া কঠিন হবে।
কিন্তু এই ধরনের অভিযোগগুলো খারিজ করা কঠিন হয়ে পড়ে যখন তারা ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে আসে।
এর আগে ইসরায়েলের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল বেন-ইয়ার গত বছর বলেছিলেন, আমাদের দেশে রাজনৈতিক ও নৈতিকভাবে এত পতন হয়েছে যে এখন তা জ্বাতিবিদ্বেষী শাসক।
সম্প্রতি এক খোলা চিঠিতে ২ হাজার বিখ্যাত ইসরায়েলি ও মার্কিন নাগরিক বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিরা জ্বাতিবিদ্বেষী শাসকদের অধীনে রয়েছে। এই বিবৃতিতে ইসরায়েলের সাবেক স্পিকার আব্রাহাম বার্গ ও প্রখ্যাত ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ বেনি মরিসও স্বাক্ষর করেছিলেন।