আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করা বিদেশি শিক্ষার্থীদের গ্রিনকার্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার এক পডকাস্টে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
পডকাস্টে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্নের পর দেশটিতে বসবাসরত গ্রিনকার্ড প্রত্যাশী বিদেশিদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘যা আমি করতে চাই এবং (নির্বাচিত হলে) যা আমি করব— তা হলো, যেহেতু আপনারা এই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, আপনাদের এই ডিগ্রির অংশ হিসেবেই গ্রিনকার্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব আপনাদের প্রাপ্য।’
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে অন্তত ১০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন— এমন ৫ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নাগরিকত্ব দেবেন তিনি। এছাড়া ২১ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদেরও নাগরিকত্ব প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন।
তার এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে অনলাইনে এই পডকাস্ট পোস্ট করে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির।
পডকাস্টে তাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি কি সেরা এবং উজ্জলতম মেধাসম্পন্ন মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে জড়ো করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন?’
উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমি এই বিদেশি শিক্ষার্থীদের জীবনের গল্প জানি। তাদের সবার ঘটনাই মোটামুটি এক। তারা এই দেশে আসে, স্নাতক ডিগ্রি নেয় এবং তারপর এই দেশে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।’
‘একসময় তারা ব্যর্থ হয়; ভারত কিংবা চীন অথবা নিজ নিজ দেশে ফেরত যায়, সেসব দেশের কেো কোম্পানিতে চাকরি নেয়…তাদের অনেকেই পরবর্তী জীবনে সফল হয় এবং একসময় দেখা যায়, তাদের অধীনে কাজ করছে হাজার হাজার মানুষ।’
‘আমি চাই— এই চক্রের অবসান ঘটুক। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোতে এখন স্মার্ট লোকজনের প্রয়োজন।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনবিরোধী মহলের সমর্থক। ২০১৬ সালে যখন তিনি প্রথম নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেন, সে সময় তিনি অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি অভিবাসীরা ‘যুক্তরাষ্ট্রের রক্ত দূষিত করছে’— এমন মন্তব্যও করেছিলেন।
ভাগ্যান্বেষনের আশায় যুগের পর যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পাড়ি জমিয়েছেন মানুষ। তাদের অনেকেই সেখানে নাগরিকত্ব পেয়ে স্থায়ী হয়েছেন। দেশটির মোট জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ অভিবাসী।
আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই নির্বাচনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে অভিবাসীদের ভোট। এ কারণে বাইডেন এবং ট্রাম্প উভয়েই অভিবাসীদের আনুকূল্য অর্জনের চেষ্টা করছেন।
তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর তার নির্বাচনী প্রচারাভিযান দপ্তরের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভেট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যেসব স্নাতক ডিগ্রিধারী কমিউনিস্ট মতাদর্শ প্রভাবিত, কট্টর ইসলামপন্থি, হামাসের সমর্থক, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা পোষন করে এবং যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের ঘোষণা প্রজোয্য হবে না।’