কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাষ্ট্র করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প যে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা থেকে তাকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্রিটিয়েন।
ট্রাম্প যদি সত্যিই কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার চেষ্টা করেন, তাহলে কানাডাও ‘আক্রমণাত্মকভাবেই’ তার জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ক্রিটিয়েন, যিনি ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
কানাডার দৈনিক গ্লোব অ্যান্ড মেইলে সম্প্রতি একটি কলাম লিখেছেন ক্রিটিয়েন। সেখানে তিনি সরাসরি ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমরা উভয়েই বয়স্ক মানুষ এবং সেই হিসেবে আপনাকে বলছি— আপনার মাথায় জট পাকিয়ে গেছে। দয়া করে মাথা ঝাঁকিয়ে জট কাটান। কানাডা বিশ্বের সেরা দেশ এবং আপনি কী করে এটা ভাবলেন যে কানাডীয়রা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার জন্য নিজেদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দেবে?”
“আপনি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার যে প্রস্তাব দিয়েছেন— তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য একটি অপমান এবং আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি অভূতপূর্ব হুমকি। আমরা এমনিতে সহজ-সরল; ভদ্র ও মৃদুভাষী, কিন্তু আমাদের মেরুদণ্ড রয়েছে এবং আমরা কঠিনও হতে পারি। তাই ভুলেও আমাদের দুর্বল ভাববেন না।”
ট্রাম্পের এই প্রচার-প্রচারণার বিপরীতে অটোয়াকে ‘প্রস্তত’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ক্রিটিয়েন বলেন, “ট্রাম্প আমাদের ব্ল্যাকমেইল করছেন এবং এই চক্র ভাঙতে হলে প্রয়োজনে আমাদের আক্রমণাত্মক হতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।”
বস্তুত, গত ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণ করবেন আগামী ২০ জানুয়ারি। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের কিছুদিন পরই কানাডার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
এই হুমকির কিছুদিন পর ট্রাম্প বলেন, কানাডাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখতে চান। গত বৃহস্পতিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি মানচিত্রের ইমেজও পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেই ইমেজে যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে কানাডাকে।
একই দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ট্রাম্প বলেন, কানাডাকে যুক্তরাজ্যের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করতে ‘অর্থনৈতিক শক্তি’ প্রয়োগ করবেন তিনি।
তবে ওইদিনই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, “কানাডা কোনো দিনও যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হবে না।”