জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনা গোটা অ্যামেরিকায় আগুন জ্বেলে দিয়েছে। দিকে দিকে চলছে বিক্ষোভ। পুলিশ বিভাগের সংস্কারের দাবি উঠছে বিভিন্ন স্তর থেকে। এত দিনে সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। পুলিশ বিভাগের সংস্কারের প্রাথমিক খসড়া দিলেন। যদিও ট্রাম্পের প্রস্তাব বিক্ষোভকারীদের আদৌ খুশি করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কা আছে।
বৃহস্পতিবার টেক্সাসের একটি চার্চের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানেই তিনি জানান, পুলিশ বিভাগের সংস্কারের জন্য আরও অর্থ খরচ করা হবে। পুলিশকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে। সমাজের সমস্ত শ্রেণির সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক যাতে ভালো হয়, সে দিকে নজর দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প জানিয়েছেন, পুলিশ সমাজ রক্ষা করে, তারা সমাজের বন্ধু।
জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার পর বিক্ষোভকারীরা ঠিক এর বিপরীত কথাই বলছিলেন। এমনকী, ডেমোক্র্যাটরাও দাবি তুলেছিলেন পুলিশ বিভাগের খরচ কমানোর। তাঁদের বক্তব্য, প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ পুলিশ বিভাগে খরচ করা হয়। দেশে পুলিশের সংখ্যাও প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। ফলে পুলিশ বিভাগের বরাদ্দ কমিয়ে তা উন্নয়নের খাতে খরচ করা হোক। পাশাপাশি পুলিশ বিভাগের আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। অনেকেরই অভিমত, মার্কিন পুলিশের মধ্যে বৈষম্য এখনও প্রকট। শুধু ফ্লয়েডের ঘটনা নয়, এর আগেও পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। সামনে এসেছে ইসলামোফোবিয়াও।
ট্রাম্প অবশ্য গোড়া থেকেই এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বিক্ষোভকারীরা ভুল বার্তা দিচ্ছেন। মনে হচ্ছে কোটি কোটি সাধারণ মার্কিন বর্ণবিদ্বেষী। বাস্তব মোটেই তেমন নয়। একই সঙ্গে এ দিন পুলিশ বিভাগের প্রভূত প্রশংসা করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, পুলিশ আছে বলেই দেশে শান্তি রয়েছে। সকলে সুরক্ষিত। একই সঙ্গে মিনেপোলিস সহ দেশের প্রতিটি প্রান্তে বিক্ষোভ ঠেকাতে ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড পাঠানোর কথাও ফের জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, রাস্তার দখল পুলিশকে নিতেই হবে। তবে শান্তিপূর্ণ ভাবে।
স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে এক মত নন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে বর্ণবাদ বজায় আছে অ্যামেরিকায়। ডনাল্ড ট্রাম্প তা বন্ধ করার বিষয়ে কোনও ভূমিকাই গ্রহণ করেননি। বরং উল্টোটাই প্রতিফলিত হয়েছে। ফলে আপাতত আন্দোলন থামবে না। দেশ জুড়ে লাগাতার বিক্ষোভ চলতেই থাকবে। ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার্স, এটা বুঝতেই হবে প্রশাসনকে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে