পার্ক ওন-সুনের মেয়ে পুলিশকে জানিয়েছিল যে তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার আগে একটি মেসেজ রেখে গেছেন। তার মেয়ে পুলিশকে জানানোর পরই মি. পার্কের নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়।
সোলের উত্তরাঞ্চলের মাউন্ট বোগাক এলাকায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। সেখানেই সবশেষ তার ফোনের সিগন্যাল পাওয়া গিয়েছিল।
তার মৃত্যুর কোন কারণ এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।
জানা যায় যে মি. পার্ক নিখোঁজ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন একজন নারী কর্মকর্তা, কিন্তু এই বিষয়টি তার মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত কিনা – তা নিশ্চিত নয়।
মি. পার্ক বৃহস্পতিবার কাজে যাননি। সংবাদ সংস্থা এপিকে সোল মহানগর প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান সেদিন সোল সিটি হল অফিসে রাষ্ট্রপতির দপ্তরের একজন কর্মকর্তার সাথে একটি মিটিংও বাতিল করেন তিনি।
পুলিশ অফিসার লি বিয়েয়ং-সেওক সাংবাদিকদের জানান যেই এলাকায় স্থানীয় সময় সকাল ১০:৫৩ মিনিটে নিরাপত্তা ক্যামেরায় তাকে শেষবার দেখা যায়, ঐ এলাকাতেই সবশেষ তার ফোনের সিগন্যাল পাওয়া গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার প্রায় ৬০০ পুলিশ ড্রোন এবং কুকুরসহ ঐ এলাকায় তল্লাশি চালায়।
তার লাশ সোল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের বাইরে মানুষ জড়ো হয়।
২০১১ সালে প্রথমবার সোলের মেয়র নির্বাচিত হন মি. পার্ক। আর গত বছরের জুনে তৃতীয় ও শেষ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন তিনি।
প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য মি. পার্ককে বিবেচনা করা হচ্ছিল ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য পদপ্রার্থী হিসেবে।
গত বছর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর সোলের প্রথম মেয়র হিসেবে তৃতীয়বার দায়িত্ব নেন মি. পার্ক।
মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের স্বপক্ষে আইনজীবী হিসেবেও ভূমিকা রেখেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান সামাজিক বৈষম্য এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন তিনি।
আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত প্রথম ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন তিনি।
২০১৭ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট পার্ক জেউন-হাই’য়ের বিরোধিতা করেছিলেন। সেসময় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভে তিনি সরাসরি বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিয়েছিলেন।
পরে ঘুষ নেয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রেসিডেন্ট পার্ক জেউন-হাইকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা