শেষ পর্যন্ত এ বছরের জন্য স্থগিত হয়ে গেল অমরনাথ যাত্রা। কাশ্মীরের দুর্গম পাহাড়ে প্রায় ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অমরনাথ হিন্দুদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তীর্থক্ষেত্র। প্রতি বছর লাখ লাখ যাত্রী সেই তীর্থক্ষেত্র পায়ে হেঁটে দর্শন করতে যান। অমরনাথ গুহা কর্তৃপক্ষ এবং সরকার জানিয়েছে, করোনার কারণে এ বছর তীর্থযাত্রা বন্ধ রাখা হচ্ছে।
শ্রীঅমরনাথজি শ্রাইন বোর্ড প্রতি বছর যাত্রার আয়োজন করে। তবে প্রতি বছরই এই যাত্রা নিয়ে উত্তেজনা থাকে। বেশ কয়েক বার তীর্থযাত্রীদের উপর জঙ্গি হামলাও হয়েছে। গত বছর জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির পরে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় যাত্রা মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এ বছর অবশ্য মূলত করোনার কারণেই যাত্রা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গত এক মাসে ভারত জুড়েই করোনার প্রকোপ লাফিয়ে বেড়েছে। বাদ নেই কাশ্মীরও। প্রতিদিনই সেখানে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা হয়েছে কাশ্মীরে। যা নিয়ে স্থানীয় মানুষদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশও করছেন। সরকার এবং শ্রীঅমরনাথজি শ্রাইন বোর্ড অবশ্য ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই যাত্রার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল। সেনাবাহিনীর একটি দলকে সে কারণে কাশ্মীরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়, এই পরিস্থিতিতে যাত্রা বন্ধ রাখাই উচিত হবে। লাখ লাখ যাত্রী সারা দেশ থেকে এই সময়ে কাশ্মীরে আসেন। এ বছরেও তেমন ভিড় হলে কাশ্মীরে করোনা আরও ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পাশাপাশি যাত্রী সুরক্ষার কথাও মাথায় রাখা হয়েছে।
এ দিকে অমরনাথ যাত্রা বাতিল হওয়ায় নতুন একটি প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। জুলাইয়ের শেষে অথবা অগাস্টের গোড়ায় কোরবানি ঈদ পালন করা যাবে তো? এর আগে রোজার শেষে ঈদ পালনের ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব নিয়েছিল সরকার। সে সময় লকডাউনের কারণে মন্দির মসজিদও বন্ধ ছিল। সকলকে বাড়িতে বসে ঈদের নামাজ পড়তে বলা হয়েছিল। কোরবানি ঈদে পশুর হাট বসে। পশু কোরবানি দেয়ার ব্যাপার থাকে। এক সঙ্গে বসে নামাজ পড়ার প্রথাও আছে। দেশের মুসলিম সংগঠনগুলি ঈদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু সরকার এখনও কিছু জানায়নি। অমরনাথ যাত্রা বাতিল করায় ঈদ নিয়েও তাই জল্পনা শুরু হয়েছে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে