জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে তৃতীয় দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এর আগে, গত সোমবার সকাল নয়টা থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
অবরোধ চলাকালে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষসহ প্রশাসনিক ভবনের কোনো কর্মকর্তা ও কর্মাচারীকে ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের প্রশাসনিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা; নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
অবরোধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান কবির রাসেল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নের দায়ে বরখাস্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছিল সেটিও ভুক্তভোগীকে দিয়ে দায়মুক্তি পত্র লেখানোর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনায় তিনি প্রথমে বলেছিলেন ধর্ষক মোস্তাফিজুর তার হেফাজতে রয়েছেন পরে তিনি জানান সে পালিয়ে গেছে। এই যে দায়িত্বে অবহেলা তার রয়েছে। এ সকল বিষয়ে ধামাচাপা এবং দায়িত্বের যে অবহেলা রয়েছে সেগুলো আমরা উপাচার্যের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছি।’
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ চলমান রয়েছে। উপাচার্যের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিটিংয়ে বসতে চান তবে সেটি প্রশাসনিক ভবনের মধ্যে। আমরা জানিয়েছি একটা আন্দোলন চলছে এর মধ্যে কিভাবে প্রশাসনিক ভবনের মধ্যে আলোচনা হতে পারে? বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বিভিন্ন জায়গা রয়েছে সেখানে আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু তিনি সেসব জায়গায় আলোচনায় বসবেন না। তিনি গো ধরে বসে আছেন প্রশাসনিক ভবনেই বসতে চান। তাহলে বলা যেতেই পারে তিনি সমাধান চাচ্ছেন না।’