ঘূর্ণিঝড় রিমাল গতি বাড়িয়ে দ্রুত এগিয়ে আসছে উপকূলের দিকে। উপকূল থেকে মাত্র ২৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে ঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে পড়তে শুরু করেছে। সন্ধ্যার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে।
যখন আঘাত হানতে পারে
রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূল এবং পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে রিমাল। এরই মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
রিমালের গতিবেগ
গতকাল শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ঝড়ের বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার ছিল, যা সকালে প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ বেড়ে এখন ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর আগেই জানিয়েছিল, উপকূলে আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ আরও বেড়ে ঘণ্টায় ১৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
কত দূরে রিমাল
মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৪০৫ কিলোমিটার দূরে ছিল, সকালে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৩০৫, সকালে তা প্রায় ৫৪ কিলোমিটার এগিয়ে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ছিল ৩৪০ কিলোমিটার দূরে, সকালে ১০ কিলোমিটার এগিয়ে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে আছে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৩০০ কিলোমিটার দূরে, সকালে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
সংকেত বেড়েছে, অর্থ কী
সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের অর্থ হলো, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের অর্থ হলো, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের ওপর বা কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।
যা বললেন আবহাওয়াবিদ
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনাসহ বেশ কিছু জেলার ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’, পায়রা-মোংলা বন্দরসহ ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত
তিনি আরও বলেন, ঝড়ের ব্যাস বড় হওয়ায় এটি সন্ধ্যায় অতিক্রম শুরু করে পুরোপুরি উপকূল অতিক্রম করে যেতে রাত হতে পারে। ঝড়ের গতিবেগ ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এই গতিবেগের বেশি হলে আমরা তাকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলি। রিমাল অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে কি না, এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।