সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমির বায়ুর প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে সিলেটবাসী তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। আবহাওয়া দফতরের তথ্যমতে আগামী আরও কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সিলেট আবহাওয়া দফতরের তথ্যমতে সোমবার (১ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোর ৬টা পর্যন্ত সিলেটে প্রায় ৩০০ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, মঙ্গলনার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবারও টানা বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৮৬ মিলিমিটার এবং শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রোবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চেরাপুঞ্জিতে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। ফলে সিলেটের সবকটি নদ-নদীর পানি আবারও দ্রুতগতিতে বাড়তে শুরু করে।
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে চার নদীর পয়েন্টে পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সিলেটে সুরমা, কুশিয়ারা, সারি ও সারিগাঙ্গ নদীর পানি দ্রুত বেড়ে পাঁচটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এছাড়াও আরো ছয়টি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে সুরমা নদীর পানি ভারতের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সীমান্তবর্তী কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
অন্যদিকে সিলেট নগরীতে থাকা ৯টি ছড়া উপচে পানি প্রবেশ করছে অফিস ও বাসাবাড়িতে। নগরীর উপশহর, সোবহানীঘাট, যতরপুর, বাগবাড়ি, ছড়ারপার, মেন্দিবাগ, বাদাম বাগিচা এলাকায় বাসাবাড়িতে ঢুকেছে পানি। এতে নগরবাসী আবারো সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে।
এ অবস্থায় কোনো সুখবর দিতে পারেনি সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ। তিনি বলেন, সুরমা তীরবর্তী ১২টি ওয়ার্ডে পানি উঠে গেছে, সময়ের সাথে সাথে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। আমরাও প্রস্তুত আছি এই দুর্যোগ মোকাবেলায়, আশ্রয়কেন্দ্র ও ত্রাণ প্রস্তুত করা হচ্ছে।