কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এই সহিংসতা থেকে রক্ষা পায়নি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট, হামলা হয়েছে বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি। এছাড়া হামলা হয়েছে নরসিংদী কারাগারে। এ সময় পালিয়ে যায় ৮২৬ কারাবন্দি। তবে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত ৪৪৭ জন নরসিংদী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। এছাড়া পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে সর্বমোট ৪৭৭ জন কারাবন্দি উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী কারাগারে হামলার সময় ৮ হাজার রাউন্ডের বেশি গুলি ও ৮৫টি অস্ত্র লুট করে হামলাকারীরা। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কার্যালয়ে হামলা করে ৩টি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া আরেক জেলা থেকে পুলিশের একটি অস্ত্র খোয়া গেছে। সব মিলিয়ে লুট হয়েছে ৮৯টি অস্ত্র। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৪১টি অস্ত্র এবং এক হাজার রাউন্ডের বেশি গুলি। এই হিসাবে লুট হওয়া ৪৮টি অস্ত্র ও প্রায় ৭ হাজার রাউন্ড গুলি এখনও দুর্বৃত্তদের হাতে। এসব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা সম্ভব না হলে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।
নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কারাবন্দিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৪৭ জন আত্মসমর্পণ করেছে। লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্রের মধ্যে ৪১টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
নরসিংদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম বলেন, ২২ জুলাই ৫ জন, ২৩ জুলাই ১২৯জন, ২৪ জুলাই ১৮৩ জন এবং ২৫ জুলাই ১৩০ জন কারাবন্দি আত্মসমর্পণ করেছেন। এছাড়া ২৩ জুলাই ১৯ জন, ২৪ জুলাই বুধবার ৭ জন এবং ২৫ জুলাই ৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে সর্বমোট ৪৭৭ জনকে আটক করা হয়।
অতিরিক্ত আইজিপি আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে জোর অভিযান চলছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ নরসিংদীর জেলা কারাগারে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে কারাগারের ভেতরে, লুট করা হয় ব্যারাকে থাকা ৮৫টি অস্ত্র। এছাড়াও কারাগার থেকে পালিয়ে যায় ৯ জঙ্গিসহ ৮২৬ কয়েদি।