বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ও নিহতের পরিবারকে পুনর্বাসন করাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ তালিকার কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন প্রতিষ্ঠানে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
ফাওজুল কবির বলেন, আহত ও নিহতের পরিবারের পুনর্বাসন করাই আমাদের কাজ বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। এখানে দেখলাম সব শ্রেণিপেশার মানুষ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের, কলেজের, মাদ্রাসার ছাত্র আছে। শ্রমিক আছে। একটা স্কুলের ছাত্রও দেখলাম, ছয় বছর বয়সের।
আহতদের বেশিরভাগ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন দেখতাম আন্দোলনে গেলে পুলিশ লাঠিপেটা করতো। এখন লাঠিপেটা করে না, গুলি করে। যেন মারা যায় বা পঙ্গু হয়ে যায়। একটা স্বাধীন দেশে এটা আশা করা যায় না।
সাধারণ মানুষের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করতে হবে জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, এই হাসপাতালে আমি যুদ্ধের পর একবার এসেছিলাম। তখন অবস্থাটা দেখেছি। তখন অন্তত তো বলা যেতো যে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী আমাদের লোকদের আক্রমণ করেছে। এখন তো সেই সান্ত্বনার জায়গাটুকুও নাই। এখন যারা করেছে, তারা তো আমাদের দেশেরই মানুষ। শুধু পুলিশ বা বিভিন্ন বাহিনী যে আহত করেছে তা নয়, এখানে এক ছাত্রকে দেখলাম কুপিয়েছে। এটা বন্ধ হতে হবে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। আমরা স্বাধীন দেশে জনগণের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করতে চাই। এটার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
তিনি বলেন, আমি প্রত্যেককে জিজ্ঞাস করেছি তারা সুচিকিৎসা পাচ্ছে কিনা, সবাই বলেছেন বিনামূল্যে এবং প্রকৃত চিকিৎসা পাচ্ছেন। কিছু মানুষ আছেন দিনমজুর, তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। সংসার চালানোর খরচ পাচ্ছে না। আমি পরিচালক মহোদয়কে বলেছি যাদের অর্থ সহায়তা দরকার তাদের একটা তালিকা দেওয়ার জন্য। সেটা আমরা হয়তো ব্যক্তি পর্যায়ে অনুরোধ করে কিংবা সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করে করবো।
আহতদের সরকারি ও প্রধান উপদেষ্টার গঠিত ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা করা হবে জানিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, এখানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের সঙ্গে আমাদের একটা আয়োজন হওয়ার কথা ছিল। শহীদের তালিকা অসম্পূর্ণ হওয়ায় সেটি পিছিয়ে পড়েছে। আহতদের তালিকা করতে অনেকে বলেছে নয়-দশ মাস বা আরও বেশি সময় লাগতে পারে। যতদিনই লাগুক, যে সরকারের আসুক, এই কাজ করতে হবে।