গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দেড় ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন প্রভাতি-বনশ্রী পরিবহনের শ্রমিকরা। চাঁদাদাবি, পরিবহনে ভাঙচুর, রাতের আঁধারে বাস পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও হেলপারকে ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে তারা এই অবরোধ করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সোমবার (২ জুন) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার জৈনাবাজারে সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হেলপারকে উদ্ধার এবং তাদের বিচারের আশ্বাসে শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এরপর সাড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রভাতি-বনশ্রী পরিবহনের ব্যবস্থাপক তোফায়েল আহমেদ অভিযোগ করেন, রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে গাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমেদ ও তার ১৫/২০ জন সহযোগী জৈনাবাজারের পশ্চিমে প্রভাতি-বনশ্রী পরিবহনের স্ট্যান্ডে এসে দুটি বাস ভাঙচুরের পর শ্রমিকদের মারধর করে। প্রতি গাড়ি থেকে ৫০০/১০০০ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে রাতে বাসে আগুন দিয়ে আমাদেরকে পুড়িয়ে হত্যার হুমকিও দেয়। আমাদের অনেক স্টাফ বাসেই রাতযাপন করেন। তাদের হুমকিতে আমরা ভয়ে আছি। প্রতিবাদ করায় ওই পরিবহনের হেলপার (চালকের সহকারী) আরিফ হোসেনকে তারা ধরে নিয়ে যায়। এখনো ওই হেলপার তাদের কাছে রয়েছে। চাঁদা দাবি, পরিবহন ভাঙচুর, শ্রমিকদেরকে মারধরের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং হেলপার আরিফ হোসেনকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে পরিবহণ শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মহাসড়কে এলোপাথাড়িভাবে বাস রেখে সড়ক অবরোধ করেন। পরে সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হেলপারকে উদ্ধার এবং তাদের বিচারের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে ৯টার দিকে সাড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মারধরে আহতরা হলেন—বাস চালক সুজন (৩০), মানিক মিয়া (৩০), হেলপার (চালকের সহকারী) মনির হোসেন (২৩), আল আমিন (২২), নজরুল ইসলাম (৩৩), রুবেল (২৩), শাহীন (২১), ফরিদ হোসেন (২৩), রেজাউল (৩০), সাব্বির (২২), রনি (৩০) এবং সোহেল (৫০)। তারা প্রত্যেকেই স্থানীয় বিভিন্ন ফার্মেসী থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অভিযুক্ত ফাহিম আহমেদ উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ওই ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। ফাহিমের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ্বাস দিলে বাস শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যান। এরপর সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভবিক হয়।