প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুদ্ধভাবে বাংলা ভাষা চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে যারা এদেশে জন্মেও ইংরেজী উচ্চারণে বাংলা বলে তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে থেকে যারা বাংলা ভাষা ভুলে গিয়ে বাংলা ভাষার মতো বাংলা বলতে পারে না, ইংরেজী অ্যাকসেন্টে কথা বলে, তাদের প্রতি করুণা করা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বরং তাঁর নিজের দেশের নিজের গ্রামের মানুষের মতো কথা বলতেইতো বেশি স্বাচ্ছন্দ্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে রাজধানীর সেগুন বাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অমর একুশে ফেব্রুয়ারী এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ছেলে-মেয়ে বাংলা ভাষায় কথা বা নিজের এলাকার কথা বলাটা (আঞ্চলিক ভাষা) ভুলে গিয়ে কেমন যেন ইংরেজী অ্যাকসেন্টে বাংলা বলার চেষ্টা করে। মনে হচ্ছে বাংলা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যারা এই দেশেই লেখাপড়া শিখেছে।’
তিনি এ সময় ’৭৫ সালে জাতির পিতার হত্যাকান্ডকে সমগ্র জাতির মতো তাঁদের ব্যক্তি জীবনের দুর্ভাগ্য উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা হত্যাকান্ডের পর দেশে আসতে না পারায় তাঁদের ছেলে-মেয়েদের বিদেশে থেকে বিদেশের স্কুলে পড়তে হলেও তাঁরা দুই বোন (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা) সবসময় চেষ্টা করেছেন তাঁদের ছেলে মেয়েরা যেন সঠিকভাবে বাংলা বলতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ও রেহানা সবসময়ই ছেলে-মেয়েদের বাংলা শেখাবার চেষ্টা করেছি এবং ঘরে বাংলায় কথা বলেছি। কারণ বাংলা ভাষাটা শিখতে হবে।’
নিজেও ভালভাবে কথা বলার ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ এবং ঢাকার ভাষা মিলিয়েই কথা বলে থাকেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু ছোটবেলায় ঢাকায় চলে এসেছি সেই ভাষার একটা প্রভাব, আর টুঙ্গীপাড়ায় জন্মেছি তাঁর একটা প্রভাব-সব মিলিয়েই বলি, যার মধ্যে কোন লজ্জা নেই।’
বন্ধবন্ধু কন্যা জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘জাতির পিতা সেই ভাষণে গোপালগঞ্জের শব্দ বলে গেছেন অকাতরে যা মানুষের ভেতর একটা আবেদন সৃষ্টি করেছিল।’
‘জাতির পিতা দ্রুত মানুষের হৃদয়ে, মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। মানুষের কথা বলতে পেরেছিলেন। সেটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে তিনি যে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষ সেটা কিন্তু গ্রহণ করেছে,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউটে একটি ট্রাষ্ট ফান্ড গঠন করে সেখান থেকে ফেলোশিপ প্রদানেও তাঁর সরকারের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান। যাতে সরকার পরিবর্তন হলেও এটি আর কেউ বন্ধ করতে না পারে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি।
অনলাইন নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি