সম্ভাব্য অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়াতে করোনা-পরবর্তী সময়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকে আরো উৎসাহিত করতে নীতিমালা পুনবিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার।
এই মহামারীর প্রভাবে আগামীতে বিশ্ব বড় ধরণের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ গত এক দশকের চলমান উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে করোনা পরবর্তী সময়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে এ উদ্যোগ নিচ্ছে।
এ নীতিমালায় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নতুন প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও, কর অব্যাহতিসহ সহজ শর্তে বৈদেশিক বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হবে। সরকার নীতি নির্ধারণী বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সিঙ্গাপুর ও জাপানের মত কম ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলো থেকে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা করছে।
করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী চীন থেকে অন্যদেশে ব্যবসা স্থানান্তরের বিষয়ে ভাবছেন। বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা এই সুযোগ কাজে লাগানোর সম্ভাব্য সুবিধাগুলো নিয়ে গবেষণা ও পরিকল্পনা করছেন।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা করোনাকালে এবং করোনা উত্তর সময়ে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বিদ্যমান প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি নতুন প্রস্তাবনা আনার সুপারিশমালা তৈরি করেছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আরো বেশি প্রণোদনার সুযোগ দেওয়া উচিত, কারণ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে অন্যান্য আঞ্চলিক প্রতিযোগী দেশ যেমন- ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া আরো বেশি সুবিধা প্রদান করছে। এরই মধ্যে তারা বিভিন্ন দেশের সাথে বৈদেশিক বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)’র মাধ্যমে কিছু বড় বাজার ব্যবস্থায় প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে।
বেজা আঞ্চলিক প্রতিযোগী বৈদেশিক বিনিয়োগ গ্রহণকারী দেশগুলির সাথে তুলনা করে আরও নতুন কিছু প্রণোদনার প্রস্তাবনা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য গত এপ্রিলের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দিয়েছে।
উক্ত প্রতিবেদনে জি টু জি (সরকারের সঙ্গে সরকার) চুক্তির ভিত্তিতে অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ স্থানান্তরে আগ্রহীদের সম্পূর্ণ কর্পোরেট কর মওকুফ করাসহ সকল যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
বর্তমানে বেজা কিছু জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কাজ করছে যারা করোনা মহামারীর কারণে চীন থেকে তাদের বিনিয়োগ স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছে।
উক্ত প্রতিবেদনে সকল বিদেশি বিনিয়োগকারী রপ্তানিমুখী উৎপাদক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দশবছরের শতভাগ কর্পোরেট কর মওকুফের প্রস্তাব দিয়ে, দেশি বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের জন্য জমি ইজারা ও বন্ডেড গুদাম সুবিধার ক্ষেত্রে ভ্যাট মওকুফেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। (বাসস)