রাজধানীর গুলশানে কূটনৈতিক পাড়ার হলি আর্টিজান বেকারিতে দেশের ইতিহাসের ভয়াবহ জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ মামলায় মৃত্যদন্ডে দন্ডিতদের ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য পেপার বুক প্রস্তুত শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের মুখপত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, দেশে নজিরবিহীন এ জঙ্গি হামলায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মামলায় বিচারিক আদালতের রায় হয়েছে গত ২৭ নভেম্বর।
রায়ে জেএমবির সাত সদস্যকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। এখন আইনি প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ হাইকোর্টে আসামিদের মৃত্যুদন্ড অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) শুনানির জন্য পেপার বুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত কার্যক্রম বিজি প্রেসে শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সুপ্রিমকোর্ট মুখপাত্র বলেন, পেপার বুক প্রস্তুত শেষে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন, পেপারবুক আসার পর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হবে। এরপর প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে এখতিয়ারাধীন বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। সেই বেঞ্চেই ডেথরেফারেন্স ও দন্ড বিষয়ে আনা আপিল শুনানি শুরু হবে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। ভয়াবহ ওই হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে পুরো দেশ।
সেদিন জঙ্গিরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে। যাঁদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি। সেই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তাও নির্মমভাবে নিহত হন।
জঙ্গি হামলার দুই বছরের মাথায় ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মামলার বিচার। নজিরবিহীন ওই জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা মামলার বিচার শুরুর এক বছরের মাথায় বিচারিক আদালত রায় দেন।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায়ে আট আসামির মধ্যে সাতজনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে খালাস দেন।
মৃত্যুদন্ড পাওয়া সাত আসামি হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ। আর খালাস পান মিজানুর রহমান। মৃত্যুদন্ড পাওয়া সাত আসামি কারাগারে রয়েছেন।
বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলার যাবতীয় নথিপত্র গত বছরের ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে। এরপর ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য পেপার বুক প্রস্তুতির কার্যক্রম নেয়া হয়। (সুত্র: বাসস)