ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, চুপ করে সহ্য করাকে দুর্বলতা ভাবা ঠিক না। সংবিধান ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সব কিছু সহ্য করি।
তিনি বলেন, ‘শান্তিকামী বাঙালি এক ৭ই মার্চের ভাষণে সশস্ত্র বাহিনী হয়ে গেছে, গেরিলা যুদ্ধ করছে। আমার বাপ গেরিলা যুদ্ধ করছে, রণাঙ্গনে। মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন করেছেন, ট্রেনিং দিয়েছেন, নিজে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করছেন। সুতরাং আমাদেরকে দুর্বল ভাইবো না। চুপ কইরা বইসা থাকি, সহ্য করি। শুধু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, সংবিধানের স্বার্থ, গণতন্ত্রের স্বার্থে।’
গতকাল বিকেলে নগর ভবনে মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আয়োজিত ৪৯তম বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গা প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘ইসলামের নাম নিয়ে ভাস্কর্য ভেঙ্গেছ। ইসলাম কি তোমার একার? মুসলমান কি তুমি একা? তোমার বাপ তোমারে পিটাইয়া মাদ্রাসায় পাঠাইছে। আর আমি ঘরে বইসা স্ব-ইচ্ছায় অর্থ ও তরজমাসহ কোরআন পড়া শিখেছি। তোমারে জোর করছে বইলা, পিটুনি খাইয়া তুমি শিখছ। আর আমি তিনটা ভাষা শিখছি – বাংলা, ইংরেজি, আরবি- স্ব-ইচ্ছায়।’
তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের দু’জন আধ্যাত্বিক ব্যক্তি এই ভূখন্ডের পদার্পণ করেছিলেন। ইসলামের জন্য, ইসলাম প্রচারের জন্য এই ভূখন্ডে এসেছিলেন। আমার বড় দাদা দরবেশ শেখ আব্দুল আউয়াল। ইসলামের জন্য জীবন দিয়ে চলে গেছেন। শেখ বোরহান উদ্দিন, তিনি ছিলেন বিজ্ঞ আলেম, ফরিদপুর এলাকায় আধ্যাত্মিক জগতের স্বনামধন্য আলেমদের একজন। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যদি ঐশ্বরিক ক্ষমতা না থাকতো তাহলে জাতিকে স্বাধীনতা দিতে পারতেন না। আর দুই আয়াত মুখস্ত কইরা তুমি হইয়া গেলা বড় আলেম! বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গো?’
ষড়যন্ত্রকারী ও উস্কানিদাতাদের উদ্দেশ্যে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘ছাগলের দুই বাচ্চা মায়ের দুধ খায় আর না বুইঝা তিন নাম্বর বাচ্চা খালি ফালায়। কি কয়- গৃহযুদ্ধ! ব্যাটা সংস্কারবাদী, বলে গৃহযুদ্ধ! তোমার কথায় গৃহযুদ্ধ হইবে? শেখ হাসিনারে দুর্বল মনে করেছ? ৮১ সাল থেকে সংগ্রাম করে করে দেশটাকে আজকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন। কত কিছু হইল! জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করলা, নিশ্চিহ্ন করে দিছে জঙ্গিবাদ, ৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিতে লটকাইছে, এটার নাম হলো শেখ হাসিনা। তোমার নেত্রীকে এখন পর্যন্ত বের করতে পারো না, একটা উচ্চারণ করো না তোমার নেত্রীর ব্যাপারে। আর তুমি আমারে গৃহযুদ্ধের ভয় দেখাও?’
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্র পালন করে, সংবিধান সমুন্নত রাখতে। তাই সব হজম করছেন, সহ্য করছেন। কারণ তিনি জাতির পিতার কন্যা। সংবিধান এবং গণতন্ত্রের বাইরে যাননি, নয় মাস জেল খেটেছে নিজে- শুধুমাত্র গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য।