বনানীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ারের দুটি নকশা হাতে পেয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। একটি নকশায় ভবনটিকে ১৮ তলা ও অন্যটি ২৩ তলা দেখানো হয়েছে। কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে এফ আর টাওয়ারের সারিতে ১৬টি ভবন আছে। ভবনগুলো একটি আরেকটির গায়ে যেন একেবারে লেপ্টে আছে। এর মধ্যে ১৩টি বহুতল ভবন। রাজউকের একটি দল গতকাল মঙ্গলবার এই ভবনগুলো পরিদর্শন করে নানা অনিয়ম পেয়েছে।
প্রায় একই অবস্থা এফ আর টাওয়ারের পাশের ভবনগুলোর। এই অগ্নিকাণ্ডের পর বহুতল ভবনের অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ও নকশা অনুযায়ী ভবন তৈরি হয়েছে কি না, তার পরিদর্শনকাজ গত সোমবার থেকে শুরু করেছে রাজউক। পরিদর্শনের দ্বিতীয় দিনে গতকাল এফ আর টাওয়ারের আশপাশের ভবনগুলো পরিদর্শন করে রাজউকের অঞ্চল-৪–এর কর্মকর্তারা। পরিদর্শনে তাঁরা এসব ভবনেও নানা অনিয়ম পেয়েছেন।রাজউকের পরিদর্শন শুরু হয় সাফুরা টাওয়ার থেকে। এটি এফ আর টাওয়ার থেকে চারটি ভবন পরে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাফুরা টাওয়ারটি ১৪ তলার অনুমোদন নিয়ে ১৭ তলা করা হয়েছে। সেখান থেকে পাশের ইরেকটরস হাউসে যায় পরিদর্শক দল। ওই ভবনটি সামনে-পেছনে যে ৫ ফুট করে জায়গা ছাড়ার কথা, তা ছাড়া হয়নি। আতাতুর্ক টাওয়ারের তিনতলা থেকে ওপরের দিকে আবাসিকের অনুমোদন থাকলেও সেখানে বাণিজ্যিকসহ বিভিন্ন অনাবাসিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ আর টাওয়ারে গিয়ে দেখা যায় নকশা অনুযায়ী নিচতলায় খোলা জায়গা থাকার কথা। কিন্তু ভবন কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি বেসরকারি ব্যাংককে ভাড়া দিয়েছে।
অন্যদিকে এফ আর টাওয়ারের পশ্চিম পাশের আহমেদ টাওয়ারে গিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষের কাউকে পায়নি রাজউকের পরিদর্শক দল। ফলে ভবনটিতে চলমান কাজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে হকস প্লাজায় অভিযানে গিয়ে অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয়ের তেমন কিছু পায়নি দলটি। তবে ২০০১ সালে ২০ তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি নিলেও এখন পর্যন্ত ১৭ তলা হয়েছে। ওই সড়কে আরও বেশ কয়েকটি ভবন পরিদর্শন করে দলটি। একাধিক ভবনে নকশার ব্যত্যয় ঘটানোর প্রমাণ পায় তারা।
পরিদর্শন নিয়ে দলের প্রধান রাজউকের অঞ্চল-৪–এর পরিচালক মো. মামুন মিয়া বলেন, আপাতত সুউচ্চ ভবনগুলোর তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোন ভবনের নকশার কী ব্যত্যয় ঘটেছে, সেটা প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়া হবে। পরে ব্যত্যয়ের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ভবনের জন্য পৃথক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজ ডেস্ক / বিজয় টিভি