চট্টগ্রামে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কার্যক্রমের আড়ালে অবৈধ মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. বেল্লাল হোসেন (৩৪) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর সদর থানাধীন সানকিভাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতার বেল্লাল হোসেন খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি থানাধীন লেনুয়া এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফ উল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মানবপাচার চক্রের প্রলোভনে পড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি হওয়া এক নারী সম্প্রতি দেশে পালিয়ে এসেছেন। তার দেওয়া বর্ণনায় বেরিয়ে আসে নারীপাচার চক্রের ভয়াবহ সিন্ডিকেটের তথ্য। উক্ত সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি থেকে শুরু করে যশোর জেলার বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃত। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত হয় মানবপাচার চক্রের বেশ কিছু দালাল এবং সীমান্ত পারাপার করতে সহায়তাকারী লাইনম্যান।
তিনি বলেন, ভারতের পতিতালয় থেকে পালিয়ে আসা ওই নারী মানবপাচারের অভিযোগে গত ২৪ জুন বায়েজিদ বোস্তামী থানায় চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলাটি হওয়ার পর র্যাব-৭ এর অভিযানে গত ২৭ জুন উক্ত মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি ঝুমু (৩০) ও পারভিন আক্তারকে (২৫) হাটহাজারী থানাধীন বালুচড়া এলাকার নতুনপাড়া সিএনজি স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে এ মামলার ১ নম্বর আসামি তারেককে গত ২৪ জুন গ্রেফতার করে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ। গ্রেফতার ঝুমু আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে মানবপাচারের নেপথ্যে থাকা মূলহোতা মো. বেল্লাল হোসেনের নাম উল্লেখ করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ঝুমু ও পারভিন পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানার নারী শ্রমিকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করে আসছিল বলে ওই সময় স্বীকার করে। বেল্লাল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায়, সে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাচ-গানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নাচ-গানের সুবাদে বিভিন্ন আঞ্চলিক নৃত্য শিল্পীদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এ ছাড়াও গার্মেন্টসে কর্মরত বিভিন্ন মেয়েদের নৃত্য দলে নেওয়ার কথা বলে তাদের সঙ্গে সে সখ্যতা গড়ে তোলে। সখ্যতার সুযোগে নারীদের পার্শ্ববর্তী দেশের বিউটি পার্লার এবং বিভিন্ন গার্মেন্টসে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তাদেরকে পাসপোর্ট ব্যতীত অবৈধভাবে সীমান্ত পার করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয় বলে জানিয়েছে।