গত ২০ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপপরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান তাইম। গত ২০ আগস্ট তাইমের মা পারভীন আক্তার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় শাহবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর শাহাদাৎ আলীকে ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এসময় আসামির পক্ষে আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত তার ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
গত ২০ আগস্ট নিহতের মা পারভীন আক্তার ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়ে তারা হলেন— এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদ, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। এ সময় তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যায়। তখন কোটা আন্দোলনকারীরা সেখানে বিক্ষোভ করছিল। ওই সময় ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালান।
প্রাণের ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতারি ছুটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের শাটার টেনে দেয়। কিন্তু শাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। গুলি থেকে বাঁচতে চাইলে তাদের দৌড় দিতে বলেন জাকির হোসেন। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে জাকির হোসেন তাকে গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।