স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলায় মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) সুদেব কৃষ্ণ রায়কে জেল হাজতে পাঠিয়েছে বরগুনার আদালত। সোমবার (২৯ জুলাই) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মশিউর রহমান খান এ আদেশ দেন। সুদেব কৃষ্ণ রায় বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার দক্ষিণ গাববারিয়া গ্রামের মিলন চন্দ্র রায়ের ছেলে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৯ মে সুদেব কৃষ্ণ রায়ের সঙ্গে হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে হয় বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ মনসাতলী গ্রামের ক্ষিতীশ চন্দ্র সমাদ্দারের মেয়ে দিপ্তি সমাদ্দারের। বিয়ের সময় একটি বেসরকারি চাকরি করতেন সুদেব কৃষ্ণ রায়। পরে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। এ সময় স্ত্রীর বাবার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নেয় সুদেব। কিন্তু তা আর ফেরত দেয়নি।
মামলার বাদী দিপ্তি সমাদ্দারের অভিযোগ এ পর্যন্ত দুইবার তিনি সন্তানসম্ভবা হন। কিন্তু তার স্বামী সুদেব রায় সুকৌশলে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে। এক পর্যায়ে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সুদেব রায়ের গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ গাববারিয়া অবস্থানকালে পুনরায় দিপ্তির বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে সুদেব। উক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করায় মারধরসহ নানাভাবে নির্যাতন করা হয়। এতে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় দিপ্তি। এরপর গত পহেলা জানুয়ারি বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সুদেব কৃষ্ণ, বাবা মিলন চন্দ্র রায় এবং মাতা আরতী রানীর বিরুদ্ধে মামলা করে দিপ্তি সমাদ্দার। উক্ত মামলায় সোমবার (২৯ জুলাই) হাজির হলে আদালতের বিচারক সুদেবকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে দিপ্তি সমাদ্দারের বাবা ক্ষিতীশ চন্দ্র সমাদ্দার বলেন, প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ করে আমি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এরপর জামাইর চাকরির সময় জমি বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা দেই। তারপরও আমার মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল সুদেব ও তার পরিবার।
তিনি আরও বলেন, এক সময় তাদের টাকা ছিলো না, এখন সে লাখ লাখ টাকা অবৈধ পথে আয় করে এবং ওই টাকার জোড়ে আমার মেয়েসহ আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছে। যে কারণে আমি নিরুপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব স্বপন বলেন, যেহেতু আসামি সরকারি চাকরি করেন, তাই আমরা আদেশ পুনঃবিবেচনার জন্য আদালতে আবেদন করবো।