স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বহিষ্কারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমরা কি দলের পক্ষ থেকে বলেছি যে যারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করব? এ সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগে এখনও হয়নি।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। শৃঙ্খলাজনিত তাদের কোনো ব্যবস্থা বা অন্য কোনো ব্যবস্থা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রান্সফার— এগুলো আওয়ামী লীগ করছে না, প্রধানমন্ত্রী করছেন না। সবই নির্বাচন কমিশন করছে। ইউএনও ট্রান্সফার, ওসিদের ট্রান্সফার, ডিসিদের ট্রান্সফার—কাজগুলো আর সরকারের নয়। নির্বাচন কমিশন বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সর্বমোট ২৮টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে এখন ৩২ বা ৫৪ দল…, তাদের সঙ্গে নেই। অনেকে তাদের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। বিএনপি না হলে নির্বাচন অশুদ্ধ হয়ে যাবে, এক তরফা হয়ে যাবে কেন? বিএনপির যে ভুয়া আন্দোলনে… এ আন্দোলনের কারণে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছে। আজ তাদের ঝটিকা মিছিল করতে হয় অন্ধকারে। কুয়াশার মধ্যে হঠাৎ করে গুহা থেকে বেরিয়ে শুরু করে দেয় মিছিল। কিছুক্ষণ পর আর নাই। পুলিশ দেখলে চলে যায়। তাদের বুকে সাহস নেই।
তারেক জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমি তারেক রহমানকে বলব, সাহস থাকলে, রাজনীতি করতে চাইলে, সৎ সাহস থাকলে মাঠে আসুন। আমার একটা রাজনৈতিক দল, আপনারা আমাদের প্রতিপক্ষ কিন্তু শত্রু কখনও ভাবিনি। ষড়যন্ত্র করিনি। খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে যাইনি, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করতে যাইনি, আমরা হত্যার রাজনীতি করি না। ষড়যন্ত্রের রাজনীতি আমরা বিশ্বাস করি না। সৎ সাহস থাকলে কেন আসেন না? লন্ডনে বসে বাংলাদেশে আন্দোলন করবেন, এ ভুলের রাজনীতির কারণে আপনারা কিছুদিন পর দলের নেতাকর্মীদের হারাবেন।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজ বিএনপির এক নেতা…, অন্যদের তো খবর নেই, প্রকাশ্যে আসে না। বিএনপির একজন লোক, পেছনে ১০-১২ জন লোক নিয়ে ঝটিকা মিছিল করে। এটা কি আন্দোলন? এতে কি জনগণের সমর্থন আছে?
‘বিএনপির অনেকেই নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চান। তার প্রমাণ তাদের দলের অনেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। শুধু শমসের মবিন, তৈমুর আলম খন্দকার নন, জেনারেল ইবরাহিম বীর প্রতীক সাহেবও নির্বাচনে এসেছেন। আজ অনেকেরই শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। অনেকে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে নিজেদের রাজনৈতিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। আর তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে চান না। সুস্থ ও স্বাভাবিক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন।’
যারা এসেছেন তাদের মধ্যে অনেক বড় বড় নেতাও আছেন। শুধু শাহজাহান ওমর নন, অনেকে এসেছেন। তারা বিএনপির রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। আজ বিএনপির রাজনীতিকে তারা প্রত্যাখ্যান করে বিশুদ্ধ রাজনীতিতে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, সামনে বিএনপির অনেক নেতা ও কর্মী অসুস্থ রাজনীতি থেকে বেরিয়ে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসবেন— বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।