প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মা-বাবা, ভাইসহ সব স্বজনদের হারিয়েছি। সব শোক-ব্যথা বুকে নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। লক্ষ্য একটাই, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুরের তারাগঞ্জ ওয়াকফস্টেট সরকারি কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রংপুর-২ আসনের প্রার্থী আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের এ জনসভায় মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোটবোন শেখ রেহানা।
দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি বদ্ধ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের পর বাংলার মানুষ ছিল অবহেলিত। তাদের মাথাপিছু আয় বাড়েনি। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে আমি এগিয়ে এসেছি।
উত্তরবঙ্গে মঙ্গা নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে মঙ্গা দূর করা হয়েছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হয়েছে। দুই বেলা খেতে পারবে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা সেটা করতে পেরেছি।
দেশকে আরও উন্নত করতে চাই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য কেবল নৌকা মার্কা থাকলেই সেটা সম্ভব। আমার আর হারাবার-পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আপনারা ভালো থাকবেন সেটাই আমার লক্ষ্য। এ জন্য ৭ জানুয়ারি সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনারা ভোট দিতে যাবেন।
দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। দেশের প্রতিটি জেলার উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করাই সরকারের লক্ষ্য। বাংলাদেশের কেউ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রংপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডিউককে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। আরও একবার তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কাই আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন করেছে। তাই আরও একবার সুযোগ দেবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার সময়কালে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বিবরণ তুলে ধরেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রংপুরের তারাগঞ্জ, মিঠাপুকুর এবং পীরগঞ্জের জনসভাস্থলের দিকে সমবেত হতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি আরও বাড়ছে।
সকাল থেকেই মিছিলে করে নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তারাগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে উপস্থিত হতে শুরু করেন। রিকশা-ভ্যান কিংবা পায়ে হেঁটে দলে দলে নির্বাচনী সভায় যোগ দেন তারা।
তারাগঞ্জের জনসভা শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও সড়কপথে পীরগঞ্জের ফতেহপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। যাবার পথে তিনি মিঠাপুকুরের জায়গীর হাটে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রংপুর-৫ আসনের প্রার্থী রাশেক রহমানের নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে সেখান থেকে তিনি পীরগঞ্জের ফতেহপুরে তার স্বামী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত করবেন এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন। সেখানেই তিনি দুপুরের খাবার খাবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সমর্থনে পীরগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেবেন।