ভারতের জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গার্গ যেন নিজের মৃত্যুর আভাস আগেই পেয়েছিলেন। জীবিত থাকতেই তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তার মৃত্যুর পর পুরো আসাম রাজ্য থমকে যাবে অন্তত সাত দিনের জন্য। ১৯ সেপ্টেম্বর জুবিনের মৃত্যুতে তার সেই কথা প্রায় সত্যি হয়েছে। মৃত্যুর পর তিন দিন রাজ্যজুড়ে সরকারি শোকপালন হয়েছে, এখনও সেই শোক কাটেনি আসামের মানুষের মনে।
শেষ সাক্ষাৎকারে জুবিন জানিয়েছিলেন, কেন মুম্বাই ছেড়ে আসামে থেকে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ১২ বছর মুম্বাইয়ে ছিলাম। শহুরে জীবন খুব একঘেয়ে লাগত। অনেকে জিজ্ঞেস করতেন কেন মুম্বাইয়ে থাকি না। একজন রাজার নিজের রাজত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। মুম্বাইয়ে কোনো রাজা নেই। লতা মঙ্গেশকর বা রাজেশ খান্না মারা গেলে খবর ছাপা হয়, কিন্তু রাজ্য থেমে থাকে না। কিন্তু আমি যদি আসামে মারা যাই, পুরো রাজ্য সাত দিনের জন্য থমকে যাবে।’
মুম্বাইয়ের বড় বড় সংগীত পরিচালক ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ডাকও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। রোহিত শেঠির এক গানে গাইতে অস্বীকার করেছিলেন জুবিন, সরাসরি না বলে দেন তিনি। সংগীত পরিচালক প্রীতম তখন বলেছিলেন, ‘ও এমনই, সত্যিই রাজার মতো।’
জুবিনের শেষ ইচ্ছে ছিল মৃত্যুর পরও আসামের মাটিতেই থাকার। গুয়াহাটির প্রিয় জায়গা ‘মহাবহু ব্রহ্মপুত্র রিভার হেরিটেজ সেন্টার’ বা তিল্লা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা পৃথিবীর সেরা জায়গাগুলোর একটি। এখানেই থাকতে চাই, এখানেই মরতে চাই। তিল্লাতেই যেন আমার সৎকার হয়, অথবা আমাকে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। আমি একজন সৈনিক।’