ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি রেখা। অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন অগণিত সম্মান । ৬৫ বছর বয়সেও তিনি এখনো আছেন সেই অভিনেত্রী হয়ে। বয়স তাঁর কাছে সংখ্যা মাত্র। তবে একটা বিষয় লক্ষ করলে দেখা যায়, বর্তমানে রেখা সে ভাবে কোনও ফিল্ম করেন না, তাও কী ভাবে এত বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন রেখা? নিশ্চয় এ প্রশ্ন মনে এসেছে অনেকের।
ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি রেখা
রেখাকে এখন সে ভাবে কোনও ফিল্মে দেখা যায় না। বিজ্ঞাপনেরও তিনি পরিচিত মুখ নন। তা হলে তাঁর উপার্জনের উত্স কী? কোথা থেকে তিনি এত টাকা পান যা দিয়ে তাঁর রাজকীয় সাজগোছ, বিলাসবহুল জীবনযাপনের খরচ সামলাতে পারেন? ১৯৭০ সালে প্রথম বলিউডে ডেবিউ করেন তিনি। প্রথম ছবি থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
একটা সময়ে বছরে পাঁচ থেকে ছ’টা বা আটটা পর্যন্ত ছবি করেছেন তিনি। তাঁর ৪০ বছরের ফিল্ম কেরিয়ারে রয়েছে মোট ১৮০টা সিনেমা। কিন্তু বর্তমানে তিনি সে ভাবে কোনও ছবি করেন না। ২০১৫ সালে ‘শামিতাভ’ ছবিতে তাঁকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল। তাঁকে বর্তমানে শুধুমাত্র বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে এবং হাই-প্রোফাইল পার্টিতে দেখা যায়।
রেখাকে এখন সে ভাবে দেখা যায় না কোনও ফিল্মে
অথচ কোনও ছবি না করার পরও এখনও সেই একই লাইফস্টাইল রয়েছে তাঁর। তার মানে নিশ্চয়ই কিছু নির্দিষ্ট উপার্জনের উত্স রেখার রয়েছে। সেটি কী?
এক বিনোদনমূলক ম্যাগাজিনের রিপোর্ট বলছে, মুম্বইয়ের বান্দ্রাতে রেখার বিলাসবহুল বাংলো রয়েছে। এ ছাড়াও মুম্বইয়ে এবং দক্ষিণ ভারতে একাধিক বাংলো রয়েছে তাঁর। এই বাংলোগুলো সবই ভাড়া দেওয়া। সেখান থেকে প্রতি মাসে একটা বড় অঙ্কের টাকা রেখার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকে।
এ ছাড়াও তিনি মাঝে মাঝে যখন কোনও ছবিতে অতিথি শিল্পী হিসাবেও আসেন, তার জন্য মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক নেন।
অতিথি শিল্পী হিসাবেও কোথাও আসলে, মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক নেন রেখা।
রেখা কোনও হাইপ্রোফাইল পার্টির অতিথি হওয়ার জন্যও পারিশ্রমিক নেন। এ ছাড়া তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। সেখান থেকেও সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন এখনও।
তবে শুধু এটুকুতেই রেখার বিলাসবহুল জীবন অতিবাহন করা মোটেই সম্ভব নয়। রেখা অত্যন্ত বুদ্ধিমতী। তিনি জানেন কী ভাবে কতটা খরচ করা উচিত। আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তাই তিনি ব্যয় করে থাকেন। ব্যয় কমাতে তিনি কখনও দূরে কোথাও ছুটি কাটাতে যান না। অন্যান্য সেলেবদের যেমন একাধিক দামি গাড়ি, রেখা কিন্তু অহেতুক দামি গাড়ির পিছনে বিপুল খরচ করেন না।
এ ছাড়া তাঁকে সব সময়ই যে অতি জাঁকজমকপূর্ণ শাড়িতে দেখা যায়, তার বেশিরভাগই উপহার পাওয়া এবং তাঁর নিজের পুরনো সংগ্রহ।
জাঁকজমকপূর্ণ শাড়িতে রেখা
ফলে ডিজাইনারের পিছনে অহেতুক অনেক টাকা তাঁকে খরচ করতে হয় না। তাঁর একজনই সেক্রেটারি, ফারজানা। রেখার সব সময়ের সঙ্গী এই ফারজানাই।
বলিউডের চিরসবুজ আবেদনময়ী এই অভিনেত্রীর আসল নাম ভানুরেখা গণেশন হলেও হিন্দী চলচ্চিত্রে রেখা নামেই বেশি পরিচিত।
১৯৬৬ সালে রাঙ্গুলা রত্নম নামে একটি তেলেগু ছবির মাধ্যমে শিশুশিল্পী হিসেবে তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়। কিন্তু নায়িকা হিসেবে ১৯৭০ সালে শাওন ভাদো নামে একটি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বলিউডে যাত্রা শুরু করেন। যদিও প্রথম দিকে তার কিছু ছবি সাফল্য পায় কিন্তু সত্তর এর দশকের মাঝের দিকে রেখা অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন। তিনি প্রয়ই তার সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং যখন তিনি প্লাস্টিক সার্জারি সম্পন্ন করেন তখন ভারতীয় মিডিয়া তাকে যৌন আবেদনের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করে।
বলিউডের চিরসবুজ আবেদনময়ী অভিনেত্রী রেখা
রেখা ১৯৯০ সালে দিল্লীর প্রখ্যাত শিল্পপতি মুকেশ আগারওয়ালকে বিয়ে করেন। এক বছর পর যখন রেখা অমেরিকাতে তখন মুকেশ কয়েকবার চেষ্টার পর আত্মহত্যা করেন এবং চিরকুটে লিখে যান কারো কোন দোষ নেই। এরপর খবর রটেছিল অভিনেতা বিনোদ মেহরার সঙ্গে বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী, কিন্তু তা নিতান্তই গুজব।
রেখা আর অমিতাভ বচ্চনের কিংবদন্তী প্রেমগাঁথা কার না জানা ?
রেখা আর অমিতাভ বচ্চনের কিংবদন্তী প্রেমগাঁথা ছবি
এক সময় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে রেখার প্রেম নিয়ে অনেক জলপনা কল্পনা ছিল।’ দো আঞ্জানে’-র সেটে প্রথম আলাপ… তারপরই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের আবেগ, ভালবাসা! বচ্চন কিন্তু তখন বিবাহিত!এরপর সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ঋষি কাপুর, নীতা সিং-এর বিয়েতে সিঁদুর পরে এন্ট্রি নেন রেখা! প্রশ্ন করলে হেসে উত্তর দেন, সরাসরি শুটিং থেকে এসেছেন, সিঁদুর পরে শট ছিল, মোছা হয়নি!
স্বামী নেই তবুও কার জন্য সিঁদুর পরেন রেখা?
অনলাইন নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি