প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। যিনি একাধারে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার ও পরিচালক। এছাড়াও দেশের এই বরেণ্যজন; ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক এবং স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব।
১৯৩৫ সালের ২৭ জুলাই ভারতের বর্ধমানে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ হাসান ইমাম। সেখানেই কাটে তার শৈশব। ১৯৬০ সাল থেকে চলচ্চিত্রে ও ১৯৬৪ সাল থেকে টেলিভিশনে অভিনয় জীবন শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ সময় সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীকে।
দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম ছিলেন সোনালি যুগের সিনেমার নায়ক। প্রথম সিনেমা ‘ধারাপাত’ এ নায়ক হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি ষাটের দশকেই। এরপর অনেকগুলো সিনেমায় নায়ক হিসেবে কাজও করে গেছেন তিনি।
টেলিভিশন নাটকে রয়েছে তার বিশাল অবদান। টানা ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে টিভি নাটকে অভিনয় করছেন তিনি। মঞ্চে নিয়মিত অভিনয় করেছেন এক সময়। এছাড়াও, অসংখ্য বেতার নাটকেও অভিনয় করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় জহির রায়হানকে সভাপতি ও হাসান ইমামকে সাধারণ সম্পাদক করে মুজিব নগর চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলী সমিতি গঠন করা হলে তাদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র দলিল ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
এই বরেণ্যজন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ অবদানের জন্য সিকোয়েন্স পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
গেল ২৭ জুলাই ছিল এই বিশিষ্টজনের ৮৬তম জন্মদিন। করোনাকালে জন্মদিনটা ঘরেই কেটেছে তার। ৮৬ বছরের বর্ণাঢ্য জীবন প্রসঙ্গে সৈয়দ হাসান ইমামের ভাষ্য, বেঁচে থাকার চেয়ে সুন্দর আর কিছু হতে পারে না। মানুষের বয়স বাড়ে, মানুষ বুড়ো হয়, কিন্তু মন কখনো বুড়ো হয় না। মন চির যৌবনে থেকে যায়।
নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি