পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে সন্তানদের গালমন্দ না করে সহানুভূতি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের নিজেদেরই তো মন খারাপ থাকে। এ অবস্থায় তাদের গালমন্দ করলে তারা মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়বে। আমরা প্রায়ই দেখি, এ রকম হলে তারা কোনো ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। অভিভাবকরা নিশ্চয় চাইবেন না তাদের সন্তানদের হারাতে। তাই গালমন্দ না করে সহানুভূতি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
রোববার (১২ মে) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ দিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এই ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনে কখনো এমন সময় আসতে পারে। শিক্ষার্থীরাও নানা কারণে অকৃতকার্য হতে পারে। এ অবস্থায় দেখতে হবে তারা কেন এমন খারাপ ফলাফল করেছে। আবার যদি তারা মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো নেয়, তাহলে পরেরবার নিশ্চয় তারা ভালো করবে।
বিএনপি সরকারের সামালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখন দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৪৫ শতাংশের মতো। আমরা সেটাকে ৬৫ শতাংশে উন্নীত করেছিলাম। কিন্তু যখন আবার আমরা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এলাম, তখন দেখি আবার সাক্ষরতার হার ৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে। তখন আবার আমরা ব্যবস্থা নেই। এখন আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৬ শতাংশের মতো। এটি নিঃসন্দেহে বড় একটি অর্জন।
নারী শিক্ষায় অগ্রগামিতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতির পিতা প্রাথমিকে মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। আমরা সেটাকে মাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নীত করেছি। এখন মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার হার বেড়েছে।
এসএসসির ফলাফলের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি আজকের ফলাফলগুলো দেখছিলাম। প্রায় সব বোর্ডেই মেয়েদের সংখ্যা বেশি। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যেও মেয়েদের সংখ্যা বেশি। রেজাল্টগুলোও আমি দেখি। প্রায়ই দেখি মেয়েদের পাসের হার ছেলেদের চেয়ে বেশি।
মেয়েদের পড়ালেখায় এগিয়ে যাওয়ার প্রশংসা করলেও ছেলে পরীক্ষার্থী কেন কম, সেটিও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে, এটা একদিক থেকে খুশির কথা। কিন্তু ছেলেরা কেন কমে যাচ্ছে? আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। পড়ালেখার সব সুযোগ করে দিচ্ছি। তাহলে ছেলেদের সংখ্যা কেন কম, আমার মনে হয় সবাইকে এর কারণটা খুঁজে দেখা দরকার।