খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতকালের বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শিষ্টাচার প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘শিষ্টাচার আমাদের শেখাবেন না। শিষ্টাচার আপনার শেখার প্রয়োজন রয়েছে। আপনার নেত্রী খালেদা জিয়ার শেখার প্রয়োজন আছে।’
বুধবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাই- দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন খালেদা জিয়ার পুত্র কোকোর মৃত্যুতে দেখা করতে গিয়েছিলেন, তাকে ঢুকতে না দিয়ে ২০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখেছিল- এটা কী ধরনের শিষ্টাচার? প্রধানমন্ত্রী যখন খালেদা জিয়াকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানালো কথা বলার জন্য, তখন তিনি যে ভাষায় কথা বলেছেন সেটা কী ধরনের শিষ্টাচার? ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী আহত হলেন—সংসদে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়া বললেন, তাকে কে মারতে যাবে? তিনি সঙ্গে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা কী ধরনের শিষ্টাচার?
তিনি বলেন, ‘জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় কেউ কী সাজুগুজু করে হাসপাতালে যায়? প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা গতকাল সেই কথাটিই বলেছেন। এটির জবাব নিশ্চয়ই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন তারা ক্ষমতায় থাকলে তা দেখাতেন না। গ্রেনেড মেরে হত্যার অপচেষ্টার পর যখন না পেরে উপহাস করে- তারা কী ক্ষমতায় থাকলে এরকম মহানুভবতা দেখাতো?’
মানবাধিকারের বিষয়টা সরকার দেখছে- উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যে তালিকা নিয়ে কথা বলে তাদের মধ্যে ১০ জনের মতো ফেরত এসেছে। ২৩-২৪ জন খুনের মামলার আসামি, ডাকাতি মামলার আসামি। এখন দেখা যাচ্ছে বিএনপি সন্ত্রাসীদের পক্ষে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে, তাদের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে। কিছু কিছু হারিয়ে গেছে ২০ বছর আগে বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালে। আমাদের সরকার সেটিকেও অ্যাড্রেস করছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনায় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনতে দেয় নাই। এটা কী মানবাধিকার লঙ্ঘন না। জিয়াউর রহমান যাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল রাতের অন্ধকারে কোন বিচার ছাড়া, ফাঁসি দেওয়ার তিন মাস পর বিচার হয়েছে। এগুলো কী মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? তারা আজকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মানবাধিকারের জন্য মানববন্ধন করে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক, সাবেক সভাপতি মনজরুল আহসান বুলবুল, সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়াসহ অনেকেই।