দুর্নীতি-অনিয়ম ও অর্থপাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ আট জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মকর্তাদের চাপের মুখে তাদের বরখাস্ত করা হয়। এর মধ্যে একজন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও পাঁচ জন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)। বাকি দুই জন ব্যাংকের দুটি বিভাগের প্রধান।
বরখাস্ত কর্মকর্তাদের সবাই এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের ঘনিষ্ঠ। এদের মধ্যে সাইফুল আলমের একান্ত সচিব আকিজ উদ্দিন ও ইসলামী ব্যাংকের ঋণের দায়িত্বে থাকা মিফতাহ উদ্দিনও রয়েছেন। তারা দুই জনই ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ছিলেন। এই দুই কমকর্তা ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ও মানবসম্পদ বিষয়গুলো দেখভাল করতেন।
এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আকিজ ও মিফতাহ, এই দুই কর্মকর্তা এস আলমের টাকাপাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ছাড়াও অনিয়ম-দুর্নীতি করে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, সরকার পতনের পর থেকে ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়া মুক্ত’ করার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তারা ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ঋণ বিতরণে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করছেন।
জানা গেছে, গত ৭ বছরে অবৈধভাবে সাইফুল আলমের নিজের এলাকা চট্টগ্রামের পটিয়ার প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকর্তাকে কোনও পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়নি, কাউকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়নি।
জানা গেছে, গতকাল রবিবার ও আজ সোমবার অফিসে যান ব্যাংকটির এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা। এরপরই তাদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবীবুল্লাহ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আকিজ উদ্দিন, মোহাম্মদ সাব্বির, মিফতাহ উদ্দিন, কাজী মো. রেজাউল করিম ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়া প্রধান অর্থপাচার প্রতিরোধ কর্মকর্তা (ক্যামেলকো) তাহের আহমেদ চৌধুরী ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মো. নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।