ইন্দোনেশিয়ার আচেহ উপকূলে নৌকাডুবি, ৭৫ রোহিঙ্গা নিখোঁজ, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে নৌকা ডুবির এক ঘটনায় ৭০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা ‘‘নিহত অথবা নিখোঁজ’’ হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ডুবে যাওয়া নৌকার আরও অন্তত ৭৫ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলরক্ষী বাহিনী। শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের এক বিবৃতিতে আচেহ উপকূলে নৌকাডুবিতে রোহিঙ্গাদের হতাহতের এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা ও ইউএনএইচসিআরের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করা হয় তাহলে এ বছরে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা হবে এটি।
গত বুধবার আচেহ উপকূলের জেলেরা সাগরে ছয় রোহিঙ্গাকে ভাসতে দেখেন। পরে তাদের উদ্ধার করে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। আচেহ উপকূলের জেলেদের একটি সম্প্রদায় বলেছে, জোয়ারের কারণে ডুবে যাওয়া নৌকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন রোহিঙ্গারা।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত হয়ে আসছেন। পাচারকারীরা প্রায়ই উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থের বিনিময়ে সাগরপথে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে। বছরের পর বছর ধরে এই রোহিঙ্গাদের অনেকে থাইল্যান্ড, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়েছেন। প্রতি বছরের নভেম্বর থেকে এপ্রিল, সমুদ্র যখন কিছুটা শান্ত থাকে, সেই সময় রোহিঙ্গারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ উপকূলে নৌকাডুবি, ৭৫ রোহিঙ্গা নিখোঁজ, কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে বর্তমানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন; যারা মিয়ানমারে বিভিন্ন সময়ের সংঘাত-সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী অভিযান থেকে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। শরণার্থী শিবির ছেড়ে যাওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, গত বছর ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছেন। যা আগের চার বছরের তুলনায় অনেক বেশি। জানুয়ারিতে প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাটি জানায়, গত বছর মিয়ানমার কিংবা বাংলাদেশ থেকে পালাতে গিয়ে অন্তত ৫৬৯ জন রোহিঙ্গা মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
আড়ও পড়ুন: মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো ২ কোটি টাকার স্বর্ণ!
ইউএনএইচসিআরের এশিয়া অঞ্চলের মুখপাত্র বাবর বেলুচ শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন, সর্বশেষ নৌকাটিতে ১৫১ জন রোহিঙ্গা ছিলেন। তাদের মধ্যে ৭৫ জন আচেহ প্রদেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করেছে। বাকিরা ‘‘মৃত অথবা নিখোঁজ’’ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আচেহ প্রদেশে ইউএনএইচসিআরের সুরক্ষা সহযোগী কর্মকর্তা ফয়সাল রহমান বলেন, বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গারা ভালো আছেন। তারা পশ্চিম আচেহতে রেডক্রসের একটি ভবনে অবস্থান করছেন। তবে আচেহ প্রদেশের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।