ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জার্মানির পোয়াবারো অবস্থা। ফুুলে ফেঁপে উঠছে দেশটির অস্ত্র ব্যবসা। শুধু তাই নয়, অস্ত্র রফতানিতে রেকর্ড গড়তে চলেছে ইউরোপের প্রভাবশালী দেশটি।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে জার্মানির অস্ত্র রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭.৪৮ বিলিয়ন ইউরো বা ৮০৫ কোটি ডলার। এটা গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি। রোববার (৩০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে জানায়, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রেক্ষিতে কিয়েভে জার্মানির অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে। অন্যদিকে ব্যাপক পরিমাণে অস্ত্র কিনেছে সৌদি আরবও।
জার্মানি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের অন্যতম সমর্থনকারী দেশ। দেশটি যুদ্ধের পর থেকে বিভিন্ন সময় ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজের জোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ওই সময় শুলজ প্রতিশ্রুতি দেন, তার সরকার অস্ত্র রফতানিতে সংযত থাকবে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভক্ত নয় এবং ন্যাটো সদস্য নয় এমন দেশের ক্ষেত্রে এই নীতি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি শুলজ প্রশাসন। তার সরকার ক্ষমতা নেয়ার কয়েক মাস পরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবং সেই থেকে ব্যাপক পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে।
অন্যদিকে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার ঘটনায় ২০১৮ সাল থেকে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দেয় জার্মান সরকার। তবে গত বছর উপসাগরীয় রাজ্যে অস্ত্র রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে বার্লিন।
এরপর সৌদি জার্মান অস্ত্র আমদানিতে শীর্ষ ৫-এ ফিরে আসে সৌদি। সৌদি আরব ও ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভক্ত এবং ন্যাটো সদস্য দেশ না হওয়া সত্ত্বেও ঢালাওভাবে অস্ত্র রফতানি করছে জার্মানি।
সার্বিকভাবে প্রথম ৬ মাসের মধ্যেই জার্মান সরকার অন্তত ৭.৪৮ বিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র রফতানির অনুমোদন করেছে। গত বছরও তারা অস্ত্র রফতানিতে নিজেদের সর্বকালের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছিল। ১২.২ বিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র বিক্রি করে জার্মানি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর অস্ত্র বিক্রিতে নতুন রেকর্ড গড়বে ইউরোপের দেশটি।