গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হতে দুই দিন বাকি। এখনো চলছে মাঠের প্রস্তুতি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ। তবে এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে দলে দলে ইজতেমা মাঠে জড়ো হতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। কেউ বাসে, কেউ ট্রাকে, আবার কেউবা পিকআপ ভ্যানে চড়ে এসেছেন ইজতেমা মাঠে। ইজতেমা মাঠে এখন হাজারো মানুষের ভিড়।
গতকাল রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, পুরো ইজতেমা মাঠ ঘিরে এখন মুসল্লিদের আনাগোনা। মাঠে প্রবেশের জন্য আছে ৮টি সড়ক, ৫টি ভাসমান সেতুসহ মোট ১৩টি প্রবেশপথ। প্রায় প্রতিটি প্রবেশপথেই মুসল্লিদের জটলা। বাস–ট্রাক থেকে এসে নামছেন মুসল্লিরা। তাঁদের সবার সঙ্গে ব্যাগ আর গাট্টিবোচকা। সবাই দল বেঁধে প্রবেশ করছেন মাঠে। পুরো মাঠে তখন জ্বলে উঠেছে বৈদ্যুতিক বাতির আলো। মাঠে ঢুকেই নিজ নিজ খিত্তায় (নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নিচ্ছেন মুসল্লিরা।
রাত ১২টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসংলগ্ন টঙ্গীর বাটা গেট এলাকায় পরপর এসে থামল টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটের ৩টি বাস। বাসগুলোর যাত্রীরা সবাই ইজতেমায় যোগ দিতে আসা মুসল্লি। গাট্টিবোচকা হাতে একে একে বাস থেকে নামছেন সবাই। এরপর বাটা গেট সড়ক ধরে দল বেঁধে প্রবেশ করছেন ইজতেমা মাঠে।
বাস থেকে নেমে আসার পর কয়েকজন মুসল্লির সঙ্গে কথা হলো। মুসল্লিরা বললেন, এ বছর মাঠের পরিবেশ বা প্রস্তুতির বিষয়ে তাঁরা জানেন না। জায়গা পেতে যেন সমস্যা না হয়, তাই আগেভাগে চলে এসেছেন। শীতের প্রকোপ থাকলেও দীর্ঘদিন পর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তাঁরা বেশ উচ্ছ্বসিত। আর এ কারণে আগেভাগেই চলে এসেছেন তাঁরা।
মুসল্লিদের একই ভিড় দেখা গেল টঙ্গীর মন্নুগেট-কামারপাড়া সড়কের ১ নম্বর ফটকের সামনে। এখানেও একের পর এক বাস থেকে নামছেন মুসল্লিরা।
এর মাঝে কথা হলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে আসা মাওলানা আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা মোট ৫৩ জনের জামাত এসেছি। ইজতেমায় যেন জায়গা পেতে সমস্যা না হয়, সে জন্য দুই দিন আগেই চলে এসেছি। গত ইজতেমায় আসতে দেরি হয়েছিল। এ কারণে মাঠে জায়গা না পেয়ে খুব কষ্ট হয়েছিল।’ একই দলের আরেক সদস্য মাওলানা আনোয়ার শাহাদাত বলেন, ইজতেমায় আগে আসতে পারলে নিজের কাছে ভালো লাগে। তা ছাড়া অনেক কিছু গোছগাছ করার ব্যাপার থাকে। তা ছাড়া এবার শামিয়ানা টানাতে হবে নিজেদের।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি। সে হিসেবে এখন যাঁরা মাঠে আসছেন, তাঁরা সবাই মাওলানা জুবায়ের অনুসারী।