ভারত থেকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ আমদানির প্রাথমিক চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ। দিল্লি সম্প্রতি একটি নিয়ম পরিবর্তনের পর এ কথা জানালো সামিট।
প্রাণঘাতী বিক্ষোভের পর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ভারতে চলে যান। এর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ভারত বিদ্যুৎ রপ্তানির নিয়ম সংশোধন করে। ভারতের গোড্ডায় আদানি পাওয়ারের কয়লা-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশে রপ্তানি করার কথা ছিল। নিয়ম পরিবর্তন করে প্রয়োজনে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ভারতের অভ্যন্তরীণ গ্রিডেও দেয়ার সুযোগ তৈরি করেছে ভারত সরকার।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান রয়টার্সকে বলেন, “নীতি পরিবর্তনের পর, ভারতে আমার অংশীদাররা ভারতেই (বিদ্যুৎ) বিক্রি করতে আরো ইচ্ছুক হতে পারে। আমাদের কোম্পানি বাংলাদেশে ট্রান্সমিশনে বিনিয়োগ করবে এবং আমাদের আরও ঝুঁকি নিতে হবে।”
সামিট গ্রুপ এক ডজনেরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালনা করে। গত বছর টাটা পাওয়ার রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড সহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় অংশীদারের সঙ্গে এক হাজার মেগাওয়াট পুনর্নবায়নযোগ্য প্রকল্প নির্মাণ এবং উৎস থেকে সরাসরি সরবরাহের জন্য প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর করে।
টাটা পাওয়ারের মুখপাত্র সামিটের এই পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাংলাদেশে কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতের আমদানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির বিদ্যুতের ৯৯ শতাংশই জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে আসে। ১৭ কোটিরও বেশি মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ দেশটিতে জমির অভাব সৌরবিদ্যুতের সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
সামিট পাওয়ার সামিট গ্রুপের সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান। গ্রুপটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, নীতিগত স্পষ্টতা না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগ বিলম্বিত করা এবং উচ্চ ঝুঁকির আশঙ্কা থাকায় আর্থিক শর্তা পুনর্বিবেচনা করা সহ নানা বিকল্প খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে আজিজ খান বলেছেন, “নীতিতে এই ধরনের দ্রুত পরিবর্তন সবসময়ই উদ্বেগের বিষয়, কারণ এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রয়েছে।”
আজিজ খান জানান, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হওয়ায় সবুজ জ্বালানি নিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক পরিকল্পনাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ভারত এবং নেপালে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং সেগুলো থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল সামিট গ্রুপের।
আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগের বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন খান। তবে তার প্রতিষ্ঠান কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন তিনি।