টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন, গোমজানী ও বাথুলী গ্রামে রয়েছে প্রায় ৩২০ টি পাল সম্প্রদায়ের কুমার পরিবার। বংশপরম্পরায় তাদের পেশা মৃৎশিল্প। কিন্তু তাদের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম এই পেশায় এখন চলছে দুর্দিন। পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্পীরা কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন।
ঘুম ভাঙতেই পরিবারের নারী পুরুষসহ শিশু সদস্যরাও নেমে যায় দৈনন্দিন কাজে। দিনভর কঠিন পরিশ্রমের পরও ভাগ্যে জোটে না ভরপেট খাবার। অনাহারে কিংবা অর্ধাহারে রাত কাটান কেউ কেউ। প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকতে হয় জ্বালানীর খোঁজে। একদিকে চড়া দামে জ্বলানী ও মাটি ক্রয় অন্যদিকে ভাড়া জমি ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন। অল্প কিছুদিন আগেও এঁটেল মাটি ছিল কুমারদের হাতের নাগালে। বিনামুল্যেই সংগ্রহ করা যেত এ মাটি। এখন সেই মাটি যেন সোনার দামে পরিণত হয়েছে।
ভক্সপপ- ৪
প্রয়োজনীয় উপকরনের মূল্যবৃদ্ধি, নাম মাত্র পারিশ্রমিক এবং অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কাজ হওয়ায়, পরবর্তী প্রজন্ম ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে এই পেশা থেকে। শিল্পীরা নিজেরাও চান না তাদের ছেলে-মেয়েরা এ পেশায় আসুক।
তবে, দেলদুয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মারুফ জানান, বিলুপ্তির পথে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে তুলতে সরকারি কিংবা ব্যাক্তিগত পর্যায়ের যেকোন উদ্যোগ নিতে তারা প্রস্তুত।
দিনভর কাজ শেষে রাতের আহার জুটলেই সন্তুষ্ট সহজ সরল এই মানুষগুলো। নিজেদের শ্রমের মূল্যের হিসাব-নিকাশ তারা কখনও কষেন না। নিপুন হাতে গড়ে যান একের পর এক শিল্পকর্ম। প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প এবং এর শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ, এমনটাই আশা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।