বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী ড. জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত আজ বুধবার (২ আগস্ট) এই রায় দেন।
পাশাপাশি জোবাইদা রহমানকে ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং তারেক রহমানকে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বেলা ৩টা ২২ মিনিট থেকে রায় পড়া শুরু করেন বিচারক। বেলা ৪টার দিকে তিনি সাজা ঘোষণা করেন।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও জোবাইদার মা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে। মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক জহিরুল হুদা। তাদের বিরুদ্ধে ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
২০০৮ সালে তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম।এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবাইদা। ওই বছরই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট জোবাইদার করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন। একইসঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবাইদাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ-টু-আপিল করেন জোবাইদা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ-টু-আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
২০২২ সালের ১ নভেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পর তাদের পলাতক দেখানো হয়। ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় ইকবাল মান্দ বানুর মৃত্যু হলে তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত ২৭ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে তারেক-জোবাইদার মামলার রায় ঘোষণার জন্য বুধবার (২ আগস্ট) দিন ধার্য করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান। এ মামলায় ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ের মধ্যে ৪২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
মামলা দায়েরের প্রায় ১৬ বছর পর আজ রায় ঘোষণা করলেন আদালত।