হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। বাংলাদেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি। দায়িত্বে নেয়ার পরই বিচার বিভাগে শুরু করেন শুদ্ধি অভিযান। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তো বটেই মামলা জট কমাতে, দেশের সব বিভাগের দায়িত্ব দিয়ে দেন, বেশ ক’জন বিচারপতির কাঁধে।
১৭ বছরের বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস ছিল বৃহস্পতিবার। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এজলাসে বসেন তিনি। বিদায় সংবর্ধনা শুরু হয়, সকাল সাড়ে ১০টায়। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়, সব আসন।
শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও পরে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি, সংবর্ধনা দেন। এরপর এজলাসে নিজের শেষ বক্তব্য দেন, প্রধান বিচারপতি। এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। এ সময় কাঁদেন প্রধান বিচারপতির পরিবারের সদস্যরাও।
বিদায়ী ভাষণে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগে আস্থা হারালে, খারাপ দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আইনজীবীদের বিভক্তি বিচারালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, উনি বিচারক হিসেবে যে রায়গুলো দিয়েছেন, সেই রায়গুলোর মাধ্যমে তিনি আইনের বিভিন্ন বিষয় আমাদের স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আইন যদি বিচার বিভাগকে পিষে দেয়; আর ধনীরা যদি আইনকে পিষে দেয়; তাহলে রাষ্ট্র ও বিচার বিভাগ সঠিকভাবে চলছে, সেটি বলা যাবে না।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তিনি বলেছেন অন্যরা ব্যর্থ হলেও সুপ্রিম কোর্টকে ঠিক থাকতে হবে। মানুষ যদি সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আস্থা হারায় সেক্ষেত্রে মানুষের দাঁড়ানোর জায়গা থাকবে না। এ কারণে সুপ্রিম কোর্টকে সবসময় দৃড়তার সঙ্গে সংবিধান সংরক্ষণের জন্যে আইনজীবীরা যে শপথ নিয়েছেন সে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকবেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তবে সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট অবকাশে যাবে; তাই আজই তার শেষ দিন। ২৬ সেপ্টেম্বর ২৪তম প্রধান বিচারপতি পাবে বাংলাদেশ।