প্রতিদিন তিন ঘণ্টার বাজারে মাছ বেচা-কেনা হয় কোটি টাকার! বলছি, হাওর অধ্যুষিত জেলা কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখোলা পাইকারি মাছ বাজারের কথা। পাইকারি এ বাজারে পাওয়া যায় হাওরের নদ-নদী ও মুক্ত জলাশয়ের তরতাজা সব মাছ। প্রতিবছর সুস্বাদু এ মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি চলে যায় দেশের বিভিন্ন বাজারে। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এখানকার স্থানীয় মাছ বিক্রেতারা।
সকাল সাতটা। মাছভর্তি ছোট-ছোট নৌকা ও ট্রলার নিয়ে ধনী নদীর পাড় ঘেঁষা কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখোলা পাইকারি মাছ বাজারের হাটে হাজির হচ্ছেন স্থানীয় মাছ বিক্রেতারা। ভোরের এ বাজার জমে সকাল সাতটায় শেষ হয় ১০টায়।
হাওরের নদ-নদী ও জলাশয়ের পানি কমে আসায় বালিখোলা এই বাজারে বেড়েছে মাছের সরবরাহ। তবে এ বছর বেশি মাছ ধরা পড়লেও করোনার কারণে মাছের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে জানান বিক্রেতারা।
১৫০ বছরের ঐতিহ্য ধনী নদীর তীরে প্রাচীন এ বাজারে রুই, কাতল, বোয়াল, আইড়, বাইম, গুলসা, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মিঠা পানির তাজা মাছ পাওয়া যায়। এরপর পাইকারদের মাধ্যমে সেগুলো চলে যাচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আবার কেউ কেউ স্থানীয় এ বাজারে কাজ করার পাশাপাশি মাছ সংগ্রহ করে বাজারেই বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।
কয়েক ঘণ্টায় তরতাজা এসব মাছ বিক্রি হয় কোটি টাকায় বলে জানালেন, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
আর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানালেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে এ জেলায় আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হচ্ছে। এর মাধ্যমে আড়ৎদাররা বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বিভিন্ন বাজারে মাছ বাজারজাত করতে পারবেন।
প্রতিবছর এ জেলায় ৮২ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। যার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও ১২ হাজার মেট্রিক টন মাছ দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে। এতে করে খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও বিরাট অবদান রাখছে।